E-Paper

পরমাণু চুল্লি: বিদেশি সংস্থার জন্য ‘শান্তি’ বিল কেন্দ্রের

মোদী সরকারের যুক্তি, ইউপিএ জমানায় আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি হলেও লাভ হয়নি। কারণ, দুর্ঘটনায় বিপুল দায় নিতে হবে আমেরিকার সংস্থাগুলি পরমাণু চুল্লি সরবরাহ করতে চায়নি। আমেরিকা দীর্ঘ দিন ধরে এ নিয়ে চাপ দিচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৬:৫১
নরেন্দ্র মোদী।

নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

আমেরিকা, ফ্রান্সের সংস্থাগুলি যাতে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কোনও দায় না নিয়েই এ দেশে পরমাণু চুল্লি সরবরাহ করতে পারে, তার জন্য আজ মোদী সরকার লোকসভায় ‘শান্তি’ বিল পেশ করল।

খাতায়-কলমে এই বিলের প্রধান লক্ষ্য, স্বাধীনতার ১০০ বছর ২০৪৭-এ পরমাণু বিদ্যুতের পরিমাণ ১০০ গিগাওয়াটে নিয়ে যাওয়া। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে মোদী সরকার ১৯৬২ সালের পরমাণু বিদ্যুৎ আইন এবং ২০১০ সালের পরমাণু দুর্ঘটনা দায়বদ্ধতা আইন প্রত্যাহার করে নতুন আইন চালু করতে চাইছে। মোদী সরকারের বক্তব্য, পুরনো আইনের ফলে বেসরকারি সংস্থাগুলি পরমাণু বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে লগ্নি করছে না। পরমাণু চুল্লিতে দুর্ঘটনার ফলে এত দিন পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাগুলি পরমাণু চুল্লি সরবরাহকারী সংস্থার কাছে যত খুশি ক্ষতিপূরণ চাইতে পারত। এ বার সেই ক্ষতিপূরণের দাবির উপরে ঊর্ধ্বসীমা চাপানো হবে। দুর্ঘটনার দায় কেন্দ্রীয় সরকার নিজের ঘাড়ে নেবে।

মোদী সরকারের দাবি, পরমাণু বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বেসরকারি লগ্নি আনতে ও আমেরিকা থেকে পরমাণু চুল্লির আমদানির রাস্তা খুলতে ‘বাস্তবসম্মত’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই বিলের নামকরণ হয়েছে ‘শান্তি’ বা ‘সাস্টেনেবল হারনেসিং অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব নিউক্লিয়ার এনার্জি ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়া’ বিল।

লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ এই বিল পেশের পরেই অবশ্য বিরোধীরা আপত্তি তুলেছেন। কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারির অভিযোগ, বেসরকারি সংস্থার মুনাফাই প্রধান লক্ষ্য। সেই বেসরকারি সংস্থাকে ঝুঁকি পূর্ণ পরমাণু ক্ষেত্রে কাজকারবার করার ক্ষমতা দেওয়া হবে। অথচ তার সীমিত দায় থাকবে। রক্ষাকবচ দেওয়া হবে। বিচারবিভাগের কাছে সুরাহা চাওয়ার উপায়ও সীমিত করে দেওয়া হবে। বিরোধী শিবিরের দাবি, এই বিল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য তা সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠানো হোক।

মোদী সরকারের যুক্তি, ইউপিএ জমানায় আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি হলেও লাভ হয়নি। কারণ, দুর্ঘটনায় বিপুল দায় নিতে হবে আমেরিকার সংস্থাগুলি পরমাণু চুল্লি সরবরাহ করতে চায়নি। আমেরিকা দীর্ঘ দিন ধরে এ নিয়ে চাপ দিচ্ছে। বিশেষ করে ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির প্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, ভারতের আমেরিকা থেকে পরমাণু চুল্লি কেনার রাস্তা খুলুক। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল অবশ্য দাবি করেছেন, পরমাণু চুল্লির সঙ্গে ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির সম্পর্ক নেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nuclear deal Government of India

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy