E-Paper

‘ভাষা-সন্ত্রাস’ বন্ধ হবে কি না, প্রশ্নে সরব মমতা

হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে এ রাজ্যের বাংলাভাষীদের আটকে রাখা এবং তাঁদের উপরে অত্যাচারের একের পর এক খবর আসছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘হরিয়ানার পুলিশ তথ্য যাচাইয়ের নামে এ রাজ্যের পুলিশকে এই তথ্য জানাচ্ছে।’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৫ ০৮:০২
বাংলাভাষী শ্রমিকদের আটক ও হেনস্থার প্রতিবাদে উৎকল ভবনের সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভ। কলকাতায়।

বাংলাভাষী শ্রমিকদের আটক ও হেনস্থার প্রতিবাদে উৎকল ভবনের সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভ। কলকাতায়। —নিজস্ব চিত্র।

বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের উপরে ‘ভাষা-সন্ত্রাস’ চলছে বলে এ বার অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি নিগ্রহের অভিযোগকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী এক্স হ্যান্ড্‌লে লিখেছেন, ‘এ রাজ্য থেকে গরিব বাঙালিদের উপর অত্যাচার চলছে। আমরা এটা সহ্য করব না।’ দীর্ঘ পোস্টের একেবারে শেষে ক্ষুব্ধ মমতা লিখেছেন, ‘ভাষা-সন্ত্রাস বন্ধ হবে, কি হবে না?’ ভিন্-রাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থার অভিযোগকে সামনে রেখে এ দিন ফের বিজেপিকে নিশানা করেছে বাম-কংগ্রেসও। বিজেপি অনড় রয়েছে অনুপ্রবেশের তত্ত্বেই।

হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে এ রাজ্যের বাংলাভাষীদের আটকে রাখা এবং তাঁদের উপরে অত্যাচারের একের পর এক খবর আসছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘হরিয়ানার পুলিশ তথ্য যাচাইয়ের নামে এ রাজ্যের পুলিশকে এই তথ্য জানাচ্ছে।’ এর সঙ্গেই রাজস্থান থেকে এ রাজ্যের বাসিন্দা বাংলাভাষীদের বেআইনি ভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে (পুশব্যাক) বলেও অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি-শাসিত রাজ্যের দিকে আঙুল তুলে মমতা লিখেছেন, ‘বাংলাভাষীদের উপর ডাবল ইঞ্জিন সরকারের অত্যাচার দেখে স্তম্ভিত। তারা কী চাইছে? এই ভাষা-সন্ত্রাস বন্ধ হোক।’

বাংলা ছবির মহানায়ক উত্তমকুমারের প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে এ দিন নিজের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার উপরে জোর দিয়ে ফের ভাষা-আন্দোলন শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “পৃথিবীতে ৩০ কোটি মানুষ বাংলায় কথা বলেন। আর বিভিন্ন রাজ্যে ভাষা-সন্ত্রাস, অত্যাচার চলছে। তাই প্রতিবাদ করা উচিত।” এ দিনই দলের ১৭টি গণসংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে মমতার প্রস্তাবিত ‘ভাষা আন্দোলনে’র কর্মসূচি স্থির করে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য পাল্টা বলেছেন, “বিভিন্ন রাজ্যে এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ধরিয়ে দিচ্ছেন ভারতীয় বাঙালিরা। ভারত ধর্মশালা নয়। পুশব্যাক হবেই।” তাঁর অভিযোগ, ‘‘অনুপ্রবেশ এবং জাল নথি তৈরির ভরকেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গ।”

সিপিএম ও কংগ্রেস একই সঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “বিজেপি বলছে, বিহারে ভোটের আগে পর্যন্ত এটা চলবে। উনি (মমতা) বলছেন রাজ্যের ভোটের আগে পর্যন্ত প্রতিবাদ চলবে। সবটাই ভোটের জন্য, মানুষের জন্য চিন্তা নেই।” মমতার উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে পদক্ষেপ করুন।”

প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকে এ দিন কলকাতায় ‘উৎকল ভবনে’র সামনে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, সুব্রতা দত্ত, সুমন পাল, শাহিনা জাভেদ, তপন আগরওয়াল প্রমুখ। তাঁরা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। পশ্চিমবঙ্গে মমতার সরকার কর্মসংস্থানের কোনও ব্যবস্থা করতে পারছে না বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের উপরে ‘নির্যাতন’ বন্ধের দাবিতে এ দিন বহরমপুরেও পথে নেমেছিল কংগ্রেস। সেখানে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরীও বলেছেন, “বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিদের বাংলাদেশি বলে নির্যাতন করা হচ্ছে। আর তৃণমূল সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতি করেছে। যে রাজ্যে হেনস্থার ঘটনা ঘটছে, সেখানে বাংলার আধিকারিকদের পাঠানো হোক।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Migrant Workers Mamata Banerjee TMC BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy