Advertisement
E-Paper

মন্ত্রীদের ভোটের ময়দানে নামিয়ে দিলেন মমতা

সময়ে হলে বিধানসভা নির্বাচনের এখনও সাত মাস বাকি। কিন্তু এখন থেকেই জেলা স্তরে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, প্রাক নির্বাচনী প্রস্তুতিতে কোন মন্ত্রী কোন জেলার দায়িত্বে থাকবেন এবং কী ভাবে তাঁরা কাজ করবেন, তারও সুর বেঁধে দিয়েছেন মমতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:২০

সময়ে হলে বিধানসভা নির্বাচনের এখনও সাত মাস বাকি। কিন্তু এখন থেকেই জেলা স্তরে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী, প্রাক নির্বাচনী প্রস্তুতিতে কোন মন্ত্রী কোন জেলার দায়িত্বে থাকবেন এবং কী ভাবে তাঁরা কাজ করবেন, তারও সুর বেঁধে দিয়েছেন মমতা। বুধবার নবান্নে ১০ মিনিটের মধ্যে মন্ত্রিসভার বৈঠক সেরে ফেলে তিনি সব মন্ত্রীদের নিয়ে নিজের কনফারেন্স রুমে পৃথক বৈঠক করেন। সেখানেই নিজের নিজের এলাকায় মন্ত্রীদের একেবারে কোমর বেঁধে ময়দানে নামার নির্দেশ দেন মমতা।

কিন্তু কেন সাত তাড়াতাড়ি ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিতে বললেন মমতা?

মনে করা হচ্ছে— গত ক’দিন ধরে বিরোধীরা যে ভাবে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছে, তাতে চাপ বাড়ছে শাসক দলের উপরে। খুব কম দিনের মধ্যে দু-দুটো ‘নবান্ন অভিযান’ কর্মসূচিও করে ফেলেছে কংগ্রেস ও বামেরা। যে সিপিএম ২০০৯-এর লোকসভা ভোটের পর কার্যত ঘরে সেঁধিয়ে গিয়েছিল, তারাই এখন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শহরের রাজপথে নেমে পড়েছে। পাড়ায় পাড়ায় পথসভা করছে। গোয়েন্দা পুলিশ মারফত সে খবর নবান্নে নিয়মিত পৌঁছচ্ছে। এ বছরের শেষে ফের ব্রিগেড সমাবেশ করার কথাও ঘোষণা করেছে বামেরা। যে কংগ্রেসকে হামেশাই ‘সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে’ বলে বিদ্রুপ করেন মমতা, তারাও দু’দিন আগে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্ন তুলে মোটামুটি একটা ঐক্যবদ্ধ চেহারা দেখিয়েছে।

তবে শুধু বিরোধীদের আন্দোলনেই যে নবান্নে চাপ বাড়ছে, তা নয়। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও মমতার দলকে যে যথেষ্ট চাপে রেখেছে, এ দিনের মন্ত্রীদের সঙ্গে মমতার বৈঠকে সে ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। নবান্নের খবর, আর পাঁচটা দলীয় বৈঠকের মতো এ দিনও মুখ্যমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করে বলেছেন, তিনি কোনও মতেই অন্তর্দ্বন্দ্ব বরদাস্ত করবেন না। কোথাও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হলে কঠোর পদক্ষেপ করতে যে তিনি পিছপা হবেন না, সেই বার্তাও এ দিন দিয়ে রেখেছেন মমতা। মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেছেন, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রেখে উন্নয়নের কাজ করতে হবে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। নিয়মিত সভা-সমাবেশ করতে হবে ও সেখানে স্থানীয় নেতৃত্বকে অবশ্যই হাজির থাকতে হবে। একই সঙ্গে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজের উপরে নজর রাখার নির্দেশও দেন মমতা।

এ দিনের বৈঠকে কোন মন্ত্রী কোন জেলার ভোট প্রস্তুতি দেখবেন, তা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের খবর, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে একাধিক মন্ত্রী থাকলেও দুই জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দেখবেন পশ্চিম মেদিনীপুর। পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সৌমেন মহাপাত্র ও সুদর্শন ঘোষদস্তিদারকে। বর্ধমানের দায়িত্ব পেয়েছেন আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বালি পাচার ও কয়লার দখল নিয়ে বর্ধমানের শিল্প ও গ্রামীণ এলাকায় তৃণমূলের অর্ন্তকলহ এমন মাত্রাছাড়া হয়ে উঠেছে যে তা মেটাতে রাজ্য নেতৃত্বকে হামেশাই হস্তক্ষেপ করতে হয়। মাস খানেক আগে ওই জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে গিয়ে সেখানকার পুলিশ ও আমলাদেরও বালি খাদান নিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

তৃণমূল সূত্রের মতে, হাওড়া জেলার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও যথেষ্ট মাথাব্যথা রয়েছে মমতার। তাই ওই জেলার দুই মন্ত্রী অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি উলুবেড়িয়ার বিধায়ক পুলক রায়কেও জেলায় ভোটের প্রস্তুতিতে সামিল করেছেন মমতা। আর তাঁদের মাথায় বসিয়েছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে (ববি)। ববির দায়িত্বে হুগলি জেলাও। এ দিনের বৈঠকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব গরহাজির থাকায় জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কোচবিহারের দায়িত্ব নিয়ে কোনও নির্দেশ মমতা দেননি।

Mamata Banerjee election Trinamool BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy