এক বালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত যুবককে পিটিয়ে ‘খুন’ করে দিলেন গ্রামবাসীরা! মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের একটি গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই বালিকা এবং অভিযুক্ত যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। রুজু করা হয়েছে দু’টি পৃথক মামলাও।
বিষ্ণুপুরের এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, ‘‘নাবালিকার দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আপাতত মেয়েটির মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে যৌন নির্যাতন ও খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি আমরা। মৃত যুবকের পরিবারের তরফেও কোনও অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতে খাওয়াদাওয়ার পর রাস্তায় খেলা করছিল বছর দশেকের মেয়েটি। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার পরেও সে ঘরে না-ফেরায় পরিবারের লোকেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সেই সময় গ্রামের এক বাসিন্দা পরিবারের লোকেদের জানান, তিনি মেয়েটিকে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে দেখেছেন। ওই যুবক মেয়েটিকে কোলে করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে আরও কয়েক জন গ্রামবাসী জানান, তাঁরাও ওই যুবককে গ্রামের শেষ প্রান্তে একটি মাঠের দিকে যেতে দেখেছেন। তখন তাঁর হাতে একটি কোদাল ছিল। এর পর পরিবার এবং পড়শিরা সেই মাঠে গিয়ে দেখেন, অভিযুক্ত যুবক কোদাল হাতে মাঠে গর্ত খুঁড়ছেন।

এখান থেকেই উদ্ধার হয় নাবালিকার দেহ।
স্থানীয়দেরই দাবি, সেই সময় যুবককে গ্রামবাসীরা চেপে ধরতেই অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন তিনি। এতে সকলের সন্দেহ আরও বাড়ে। গ্রামবাসীরা তাঁকে মারধর করতেই ওই যুবক হাত দিয়ে একটি ঝোপের দিকে ইশারা করেন। গ্রামবাসীরা সেখানে যেতেই ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় নিখোঁজ বালিকার অর্ধনগ্ন দেহ। এর পর ওই যুবককে আরও মারধর করেন গ্রামবাসীরা।
এসডিপিও জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, সেখানে একটি নাবালিকার দেহ পড়ে রয়েছে। নাবালিকাকে খুনের অভিযোগে গ্রামের মানুষ এক যুবককে বেধড়ক মারধর করেছে। তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সেখানেই পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ওই যুবক নাবালিকাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করেন। এর পর মৃতদেহ লোপাট করতেই বাড়ি থেকে কোদাল এনে গ্রামের মাঠে গর্ত খুঁড়ছিলেন। নাবালিকার বাবা বলেন, ‘‘স্থানীয় এক বাসিন্দার মুখে যখনই শুনলাম যে, ওই যুবক আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়েছে, তখনই বুঝতে পেরেছিলাম কিছু একটা অঘটন ঘটেছে। এর পর ছেলেটাকে চেপে ধরতেই সব জানতে পারি।’’ মৃতার এক আত্মীয়া বলেন, ‘‘ফুটফুটে ওই ছোট মেয়েকে এ ভাবে কেউ নির্যাতন করে মেরে ফেলতে পারে, তা ভাবনার অতীত।’’