Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Death

প্রতারণায় আত্মঘাতী, পরিবারকে পুলিশি হুমকির অভিযোগ

গত ২৭ সেপ্টেম্বর লালগোলার সারপাখিয়ার বাসিন্দা আব্দুরের দেহ উদ্ধার হয় খেত থেকে। পরিবারের দাবি, শিক্ষকতার চাকরির জন্যে দিবাকর কনুই নামে এক যুবককে ছ’লক্ষ টাকা দেন আব্দুর।

প্রতীকী ছবি।

বিমান হাজরা
লালগোলা শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২২ ০৭:২১
Share: Save:

টাকা দিয়ে চাকরি না পাওয়ায় আব্দুর রহমান নামে এক যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি তাঁর পরিবারের। ঘটনার পরে ২০ দিন কেটে গেলেও মূল অভিযুক্ত অধরা। আব্দুরের পরিবারের দাবি, শনিবার বাম নেতানেত্রীরা তাঁদের সঙ্গে দেখা করার পরেই পুলিশ হুমকি দিয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে মৃতের বাবা মফিজুদ্দিন শেখ এবং তাঁর ছেলে রমজান শেখের দাবি, আব্দুরের আরও দুই দাদাকেও না জানিয়ে লালগোলা থেকে বেরোতে ‘নিষেধ করেছে’ পুলিশ। তবে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার কে শবরী রাজকুমার পুলিশের হুমকির অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ নিজে থেকেই মামলা করে এক জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হুমকি দেবে কেন!’’

গত ২৭ সেপ্টেম্বর লালগোলার সারপাখিয়ার বাসিন্দা আব্দুরের দেহ উদ্ধার হয় খেত থেকে। পরিবারের দাবি, শিক্ষকতার চাকরির জন্যে দিবাকর কনুই নামে এক যুবককে ছ’লক্ষ টাকা দেন আব্দুর। কিন্তু চাকরি মেলেনি। টাকা ফেরত না পেয়ে তিনি আত্মঘাতী হন বলে দাবি। ঘটনায় এক জন গ্রেফতার হলেও মূল অভিযুক্ত দিবাকর অধরা। মফিজুদ্দিনের ক্ষোভ, “পুলিশের তদন্তে আস্থা নেই। সিবিআই তদন্ত চাই।’’ রমজান বলেন, “বামকর্মীরা আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। তার পরেই আমাদের চার ভাইকে লালগোলা থানায় ডেকে ওসি হুমকির সুরে বলেন, ‘বিরোধী দলকে নিয়ে লাফালাফি করছেন, করুন। কিন্তু আমি অফিসে (থানায়) বসে পাঁচ টাকার কলম চালাব।’ আমার দুই দাদাকে ‘আমার অর্ডার ছাড়া লালগোলা থানার বাইরে যাবি না’ বলে হুঁশিয়ারিও দেন।” মফিজুদ্দিনের দাবি, “পুলিশ আমাকে হুমকি দিচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, মাস কয়েক আগে পুরুলিয়ার ঝালদায় খুন হওয়া কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর পরিবারও স্থানীয় থানার আইসি-র বিরুদ্ধে তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন।

তবে পুলি‌শ সুপার শবরী রাজকুমারের দাবি, ‘‘আমাদের না জানিয়েই ময়না-তদন্ত না করে দেহ কবর দেওয়া হয়েছিল। জানতে পেরে পুলিশ ওঁদের বাড়ি গিয়ে অভিযোগ চেয়ে মামলা করে। এক অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। অন্য জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ পুলিশ সুপারের বক্তব্য, ‘‘ওঁরা অভিযুক্তদের কথা বলে বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা করছিলেন। পুলিশ নিজে থেকে মামলা করে গ্রেফতার করেছে। তা হলে তারা হুমকি দেবে কেন? মৃতের বাবা এক দিন থানায় অভিযোগ জানান। তার পরে আর থানামুখো হননি। তবে থানা থেকে কী করে তাঁকে হুমকি দিল।’’

দিবাকর দ্রুত গ্রেফতার না হলে ২৯ অক্টোবর লালগোলা থানা ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে ডিওয়াইএফ। রবিবার মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অধীর বলেন, “ওই যুবক তৃণমূলের নেতাকে চাকরির আশায় টাকা দিয়েছিলেন। মৃতের পরিবারকে এখন হুমকি দিচ্ছে স্থানীয় পুলিশ যে, লালগোলার বাইরে যাওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী দেখে যান, কী করছে আপনার পুলিশ।” তৃণমূলের জঙ্গিপুর জেলার সভাপতি খলিলুর রহমান অবশ্য বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death police Lalgola
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE