পূর্ণেন্দু মাঝি।
চোর ধর্মকথা শোনে না। বহু প্রচলিত এই প্রবাদ বাক্যকে কার্যত সত্যি প্রমাণ করল সোমবার দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুরের ঘটনা।
বিষ্ণুপুর থানার আমতলা-বারুইপুর সংলগ্ন ঘোষপাড়ার বাসিন্দা পূর্ণেন্দু মাঝির (৩৭) ‘অপরাধ’ — তিনি এলাকায় ক্রমশ বেড়ে চলা অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদ করেছিলেন সালিশি সভায়। শোধরানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন স্থানীয় এক যুবককে। তারই ‘শাস্তি’ হিসেবে ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল ওই যুবকের বিরুদ্ধে।
পূর্ণেন্দুবাবুর খুনে অভিযুক্ত যুবক রাহুল ঘোষ পলাতক। তবে তার চার সঙ্গীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুর থানার ঘোষপাড়ায় সম্প্রতি হার ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। পরোক্ষে অভিযোগ উঠেছিল, স্কুলছুট রাহুল এবং তার সঙ্গীরাই রাতের অন্ধকারে মহিলাদের সোনার হার ছিনতাই করছে। এর পরেই সম্প্রতি এক সালিশি সভা ডাকেন বাসিন্দারা। এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে রাহুলের সম্পর্ক আছে, সে প্রসঙ্গেও সেখানে আলোচনা হয়।
এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ওই সভায় পূর্ণেন্দু রাহুলকে সতর্ক করে বলেন, এর পরে ফের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, এর পরে সোমবার স্থানীয় ক্লাবের একটি অনু্ষ্ঠান থেকে দুই পরিচিতের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন পূর্ণেন্দু। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই যুবক পুলিশকে জানিয়েছেন, মাঝপথেই রাহুল পূর্ণেন্দুর উপরে হামলা চালায়। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় বলেও অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় পূর্ণেন্দুকে আমতলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুল মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় সে প্রায়ই মদ এবং জুয়ার আসর বসাত। বিভিন্ন রকম অসামাজিক কাজেও জড়িত ছিল রাহুল।
মঙ্গলবার সকালে পূর্ণেন্দুবাবু খুন হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজিত বাসিন্দারা রাহুলের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। এমনকী তার সঙ্গীদের মারধর করা হয়। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, রাহুলের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি বিষ্ণুপুর থানারই রসপুঞ্জ এলাকায় কাল্লু মোল্লা নামে এক যুবক মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে এক মহিলা ও তাঁর ছেলেকে পিষে দেয় বলে অভিযোগ। জখম হয়েছিল আরও চার জন। ওই ঘটনার জেরে চার দিন অগ্নিগর্ভ ছিল ওই এলাকা। পুলিশের উপরে হামলা চালানো হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশ ফাঁড়িও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy