Advertisement
E-Paper

বাম-সঙ্গে আপত্তি কী, চলতি হাওয়ায় মণিশঙ্কর

একেই বোধহয় বলে ‘টক অফ দ্য টাউন’! সদ্য সল্টলেকে সিটিজেন্স ফোরামের মোড়কে একটা পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব। রাজারহাট অংশের জন্য সেই নাগরিক মঞ্চের বৈঠক ছিল শুক্রবার তেঘরিয়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৫৯
মণিশঙ্কর আইয়ারের সদ্য প্রকাশিত ‘আচ্ছে দিন? হা হা’ বইটিতে লেখককে দিেয় সই করিয়ে নিচ্ছেন বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের পুত্রবধূ সায়রা শাহ হালিম। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

মণিশঙ্কর আইয়ারের সদ্য প্রকাশিত ‘আচ্ছে দিন? হা হা’ বইটিতে লেখককে দিেয় সই করিয়ে নিচ্ছেন বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের পুত্রবধূ সায়রা শাহ হালিম। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

একেই বোধহয় বলে ‘টক অফ দ্য টাউন’!

সদ্য সল্টলেকে সিটিজেন্স ফোরামের মোড়কে একটা পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব। রাজারহাট অংশের জন্য সেই নাগরিক মঞ্চের বৈঠক ছিল শুক্রবার তেঘরিয়ায়। শহরের এক প্রান্তে এমন উদ্যোগকে যখন দানা বাঁধানোর চেষ্টা হচ্ছে, ঘটনাচক্রে সেই সন্ধ্যাতেই এক পুস্তক বিপণির আলোচনাসভায় আরও সরাসরি উঠে এল প্রশ্নটা। দেশ এবং রাজ্যের রাজনীতির নিরিখে কংগ্রেস এবং বামেদের মতামতের যেখানে এতটাই মিল এখন, তা হলে তারা যৌথ ভাবে সমঝোতা গড়ে তুলছে না কেন? উত্তর দেওয়ার জন্য হাতের কাছে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে এক জন জানালেন, সমঝোতা হলে ক্ষতি কী! আর অন্য জন দলীয় লক্ষ্ণণরেখা অতিক্রম না করেই বললেন, সংসদের ভিতরে তাঁরা তো এক হয়ে লড়ছেনই!

উপলক্ষ ছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ মণিশঙ্কর আইয়ারের নতুন বই ‘আচ্ছে দিন, হা হা’-র কলকাতায় আবরণ উন্মোচন। সেই উপলক্ষেই পার্ক স্ট্রিটের একটি পুস্তক বিপণি আয়োজন করেছিল ‘মোদী সরকারের ৫০০ দিন’ শীর্ষক আলোচনার। বক্তা মণিশঙ্কর স্বয়ং এবং সিপিএমের তরুণ সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। মণিশঙ্কর তাঁর নিজস্ব কায়দায় রসিকতার রং মিলিয়ে সাফ বললেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর সরকারের একটাই ভাল দিক আমার নজরে এসেছে। এদের এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। আর চারটে বছর এদের সহ্য করলেই চলবে!’’ ক্ষমতায় আসার আগে মোদী কেমন প্রতিশ্রুতির বান ডাকিয়েছিলেন আর ক্ষমতায় আসার পরে ৫০০ দিনের মধ্যে সে সব পালনে কতটা কৃপণ হয়েছেন, কংগ্রেসের রাজনৈতিক লাইন মেনেই তার ব্যাখ্যা পেশ করেছেন মণিশঙ্কর। এই বর্ণনার কোনও বিরোধিতা না করেই সিপিএমের ঋতব্রতের মন্তব্য, ‘‘সম্রাট পঞ্চম লুই বলেছিলেন, আমার পরেই মহাপ্রলয়! আমাদের এখনকার প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব অনেকটা এই রকম!’’ প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থতার সমালোচনার পাশাপাশিই তিনি সরব যে কোনও অছিলায় যে কোনও প্রতিষ্ঠানে সঙ্ঘ পরিবারের অসহিষ্ণুতার রাজনীতি আমদানির বিরুদ্ধে। এবং এই প্রশ্নে প্রবীণ মণিশঙ্কর ও তরুণ ঋতব্রতকে আরও কড়া উদাহরণ এবং উপকরণ সরবরাহ করে দিলেন সঞ্চালক ইতিহাসবিদ তথা অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায়!

পরিবেশ যখন এমন অনুকূল, মতের মিল আরও ঘন হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। সেটাই করলেন মণিশঙ্কর। তাঁদের দলের ‘বুরে দিন’ চলছে মেনে নিয়েই বললেন, ‘‘বামেরা আদর্শগত এবং রাজনৈতিক ভাবে আমাদের বিরোধী। কিন্তু এমন সাম্প্রদায়িক শক্তির মোকাবিলায় আমার মনে হয়, আমরা একই সঙ্গে লড়তে পারি।’’ ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে ইউপিএ-১’র কাহিনিও টেনেছেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সঞ্চালক আসর ছে়ড়ে দিয়েছিলেন প্রশ্নের জন্য। এক প্রশ্নকর্ত্রী (পরে জানা গেল তাঁর নাম সায়রা শাহ হালিম, পরিচয় বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমের পুত্রবধূ) পূর্ণ মাত্রায় কাজে লাগালেন সুযোগটা। জানতে চাইলেন, বাম ও কংগ্রেস পরস্পরের হাত ধরবে না কেন? মণিশঙ্কর আগেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন। আর ঋতব্রত এ বার বললেন, ‘‘কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক পার্থক্য আছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক শক্তির মোকাবিলায় বিরোধী শক্তি হিসাবে সংসদে ঐক্যবদ্ধ লড়াই-ই চলছে।’’

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনও। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, বাবা অসুস্থ, তাই তিনি আসতে পারেননি। তাঁর জায়গায় তৃণমূলের অন্য কেউও উপস্থিত হননি। সুযোগ পেয়ে ঋতব্রত কটাক্ষ করে নিয়েছেন, ‘‘আচ্ছে দিন কিন্তু মোদীর জমানায় কারও কারও এসেছে। সারদা তদন্তে তৃণমূল যেমন স্বস্তি পেয়েছে!’’ এ রাজ্যে কংগ্রেস-বামকে কাছাকাছি হতে হলে মুখ্য বিষয় হয়ে তৃণমূল-বিরোধিতা তো থাকতেই হবে!

achhe din achhe din ha ha mani shankar aiyar book mani shankar aiyar hasim abdul halim daughter in law
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy