Advertisement
E-Paper

সিন্ডিকেট মামলায় ফের ক্ষোভ চেল্লুরের

থানায় গেলে কী হয়, সেটা তাঁদের জানা আছে বলে দিন পাঁচেক আগে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। সোমবার তিনি ফের জানিয়ে দিলেন, পুলিশ যদি যথাযথ সুরক্ষা দিতে না-পারে, তা হলে ভুল বার্তা যাবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০৩:১৯

থানায় গেলে কী হয়, সেটা তাঁদের জানা আছে বলে দিন পাঁচেক আগে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। সোমবার তিনি ফের জানিয়ে দিলেন, পুলিশ যদি যথাযথ সুরক্ষা দিতে না-পারে, তা হলে ভুল বার্তা যাবে।

পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রধান বিচারপতির ক্ষোভের মূলে আছে সিন্ডিকেট-রাজ। রাজ্য জুড়ে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য নিয়ে তিনি যে তিতিবিরক্ত, আবার তা জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি চেল্লুর। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পেশিশক্তি প্রশাসন চালাতে পরে না।’’ সিন্ডিকেটের দাপট রুখতে তিনি যে মরিয়া, নিজের দলের কাউন্সিলরকে শ্রীঘরে পাঠিয়ে সেই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পুলিশ যথেষ্ট তৎপর না-হওয়ায় বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করছে হাইকোর্ট।

একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে গত ১৫ জুলাই প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘সিন্ডিকেটের জুলুম বন্ধ করতে কয়েকটি ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যে-ব্যবস্থা নিয়েছে, তা ভাল। কিন্তু এ-পর্যন্ত যা প্রকাশ্যে এসেছে, তা হিমশৈলের চূড়া মাত্র।’’ নেপালের দু’টি ব্যবসায়ী সংস্থাকে বজবজে সিন্ডিকেটের জুলুমের শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেই মামলায় ২০ জুলাই প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালত পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কাজ হয়নি। থানায় গেলে কী হয়, তা আমাদের জানা আছে।’’ আদালতের নির্দেশের পরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, হাইকোর্টে হাজির হয়ে তা জানানোর জন্য সে-দিনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

নেপালের ওই দুই সংস্থার আইনজীবী সুবীর সান্যাল ও রাতুল বিশ্বাস জানান, তাঁদের মক্কেলরা নেপালে থাকেন এবং ভোজ্য তেলের কারবার করেন। মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ভোজ্য তেল এনে বজবজে মাদার ডেয়ারির একটি গুদামে মজুত করা হয়। তার পরে সেই তেল পাঠানো হয় রেলপথে। কিন্তু গত বছর থেকে ‘বজবজ এডিবল ওয়েল ট্যাঙ্কার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ সেই কাজে বাধা দিচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তাদের সংগঠনের ট্যাঙ্কার মারফত সড়কপথে ওই তেল নেপালে পাঠাতে হবে। এতে রাজি না-হওয়ায় তাঁদের মক্কেলদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার জোগাড়। নিরুপায় হয়েই ওই ব্যবসায়ীরা বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের আদালতে মামলা করেন।

ওই দুই সংস্থাকে নিরুপদ্রবে কাজ করতে দেওয়ার জন্য গত ১৬ জুন দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারপতি দত্ত। তার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পাল্টা মামলা করে ট্যাঙ্কার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এ দিন ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলা উঠলে জানানো হয়, জেলার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী হাজির হয়েছেন। শুনানি চলাকালীন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্রের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘ওই দুই সংস্থাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিতে ভীত কেন? অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এ-পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ?’’ জয়ন্তবাবু আদালতকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘এফআইআর দায়ের হয়েছে। আমরা কাউকেই রেয়াত করব না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তখনই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘পুলিশ যদি নিরাপত্তা দিতে না-পারে, তা হলে ভুল বার্তা যাবে।’’

এরই মধ্যে ট্যাঙ্কার সংগঠনের আইনজীবী কিশোর দত্ত আদালতে দাবি করেন, নেপালের দুই ব্যবসায়ী সংস্থা বিচারপতি দত্তের আদালতে যে-মামলা করেছিল, তা ধোপে টেকে না। তাঁর ব্যাখ্যা, পুলিশকে জানিয়েও লাভ না-হলে ওই দুই সংস্থা ফৌজদারি বিধি মেনে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যেতে পারত। কিন্তু তারা সরাসরি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। সেই কারণে মূল মামলা (বিচারপতি দত্তের আদালতে দাখিল করা) ধোপে টেকে না। ডিভিশন বেঞ্চের কাছে কিশোরবাবুর আবেদন, ‘‘ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠনকে সিন্ডিকেট তকমা দেওয়া ঠিক হবে না।

ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন এই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি। মামলার পরবর্তী দিনক্ষণও জানায়নি।

Manjula Chellur grievance
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy