নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রকাশ্যে এল আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। শূন্য পেয়েও শীর্ষে রয়েছেন অনেকে। এমনকি, একটিও উত্তর না লিখে মেধাতালিকায় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান দখল করে নিয়েছেন বেশ কয়েক জন। এমনই তথ্য উঠে এসেছে সিবিআই তদন্তে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার থেকে ওই তথ্য হাতে পেয়েছেন মামলকারীরা। আপাতত তাঁদের হাতে রয়েছে ৫০ জনের একটি তালিকা। এই ৫০ জনের সকলে ৪৩ নম্বর করে পেয়েছেন বলে দেখানো হয়েছিল এসএসসি-র তরফে।
পরীক্ষায় সবচেয়ে বেশি নম্বর পান যে পরীক্ষার্থী, মেধাতালিকায় তাঁরই নাম শীর্ষে থাকে। এমনটাই দেখা যায় বা দেখে অভ্যস্ত সকলে। কিন্তু স্কুলে গ্ৰুপ-ডি বা চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগে দেখা গেল এর ব্যতিক্রম। ১০টি জেলায় ৫০ জনের ওই তালিকায় শূন্য পেয়ে ৬ জন মেধাতালিকার প্রথমে রয়েছেন। যদিও কমিশনের সার্ভার বলছে তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৩। আর সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে, ওই পরীক্ষার্থীরা কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি। সাদা খাতা জমা দিয়ে ৪৩ নম্বর পেয়েছেন। শূন্য পেয়ে প্রথম স্থানে রয়েছেন হুগলি, বীরভূম এবং জলপাইগুড়ির এক জন করে পরীক্ষার্থী। মালদহে তিন জন শীর্ষে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন করে রয়েছেন সাধারণ, তফসিলি জাতি (এসটি) এবং তফসিলি জনজাতি (এসসি)-র।
এই তালিকা অনুযায়ী শূন্য পেয়ে বাঁকুড়ায় ৬ জন মেধাতালিকায় রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আবার এক জন রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। বীরভূমে শূন্য পেয়েছেন তিন জন। শীর্ষে এক জন। বর্ধমান এবং জলপাইগুড়িতে ১ জন করে শূন্য পেয়েছেন। শূন্য পাওয়ার তালিকায় রয়েছেন কোচবিহারের ২ জন। এই তালিকায় থাকা দক্ষিণ দিনাজপুরের ৭ জনই শূন্য পেয়েছেন। জেলায় তাঁদের মধ্যে এক জনের স্থান দ্বিতীয়। কোনও নম্বর না পেয়েও হুগলির ৩ জনের মধ্যে ২ জন মেধাতালিকায় প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। মালদহের পনেরো জন শূন্য পেয়েছেন। এ ছাড়া তালিকায় রয়েছেন হাওড়ার ৭ জন।
সিবিআইয়ের দাবি, এই ৫০ জনের নিয়োগ বা সুপারিশে উত্তরপত্রের পিছনেও উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) তৈরি করেছিল কমিশন। জনসমক্ষে যে উত্তরপত্র আনা হয়েছিল সেগুলি নকল। কারণ, কলকাতায় তাদের সার্ভার বলছে এই ৫০ জন ৪৩ নম্বর করে পেয়েছেন। কিন্তু আসল উত্তরপত্র বলছে অন্য কথা (যা উদ্ধার করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে)। সেখানে দেখা যাচ্ছে তাঁরা সবাই শূন্য পেয়েছেন। শুধু তাই নয় মূল মেধাতালিকা (প্যানেল) বাদ দিলে ওয়েটিং লিস্টেও এ ভাবে কারচুপি করে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
মামলাকারীদের এক আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘কলকাতা হাই কোর্ট আগেই বলেছিল মুড়ি মুড়কির মতো দুর্নীতি হয়েছে। এখন তা বেরোচ্ছে। কমিশন নিজেই বেআইনি চাকরি প্রাপকদের সেই তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় শীঘ্রই জনগণের সামনে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy