E-Paper

‘এর থেকে তো গুলি করে মেরে দিতে পারত, এই অপমান এবং হেনস্থা আর সহ্য করতে পারছি না’

শহিদ মিনারের পাদদেশে তখন কয়েক হাজার শিক্ষক, গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মী। নিয়োগের নথি একত্রিত করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার তোড়জোড় চলছিল। সে সময়ই ভিড় থেকে ভেসে এল কথাটা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:২৬
সুপ্রিম কোর্টে মামলার জন্য প্রবল রোদে তাঁদের প্রতিনিধির কাছে নথি জমা দিচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। বুধবার শহিদ মিনার চত্বরে।

সুপ্রিম কোর্টে মামলার জন্য প্রবল রোদে তাঁদের প্রতিনিধির কাছে নথি জমা দিচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। বুধবার শহিদ মিনার চত্বরে। ছবিঃ বিশ্বনাথ বণিক।

­“এর থেকে তো গুলি করে মেরে দিতে পারত। এই অপমান আর হেনস্থা আর সহ্য হচ্ছে না”, কথাটা ছিটকে এল ভিড়ের থেকে।

শহিদ মিনারের পাদদেশে তখন কয়েক হাজার শিক্ষক, গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মী। নিয়োগের নথি একত্রিত করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার তোড়জোড় চলছিল। নথি জমা দিতে পড়েছে লম্বা লাইন।

পূর্ব মেদিনীপুরের শিক্ষিকা মিনতি মণ্ডলের গলাতে তীব্র ক্ষোভের জ্বালা, “এই যন্ত্রণা সহ্য হয় না। আমরা চোর নই। আমরা নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি। অথচ পুরো প্যানেল বাতিল করে আমাদের সবাইকে চোর প্রতিপন্ন করা হল। এর থেকে তো গুলি করে দিতে পারত!”

গত সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে চাকরি বাতিলের রায় ঘোষণার পর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের শিক্ষক অতনু পাত্র চোখে সব অন্ধকার দেখছেন। একার উপার্জন। গরমে দরদর করে ঘামতে ঘামতে বলে চলেন, “হার্ট ব্লকের জন্য প্রতি মাসে বাবার চিকিৎসায় পাঁচ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। শিক্ষকতার পাকা চাকরি পেয়ে ফ্ল্যাট কিনতে গৃহ ঋণ নিয়েছি। মাসে ২৪ হাজার টাকা ইএমআই দিতে হয়। আগামী মাস থেকে বেতন বন্ধ হয়ে গেলে কী করব!” শহিদ মিনারের নীচে মাটিতে বসে নিজেদের নথি মিলিয়ে দেখার ফাঁকে ঘাড় তুলে এক জনকে বলতে শোনা গেল, “ওএমআর শিটে আমারই নম্বর। নীচে আমারই স্বাক্ষর। আমার নিয়োগ পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ডের সই আর ওএমআর শিটের নীচে আমার সই দেখুন, একই। এর পরেও আমরা চোর?”

নথি জমা দেবেন বলে এ দিন কোলে আড়াই বছরের শিশুকে নিয়ে ছাতা মাথায় দিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন পুরুলিয়ার শিক্ষিকা নবনীতা কুন্ডু। তিনি বলেন, “আমার ভাসুর ক্যানসারে আক্রান্ত। বিপুল চিকিৎসার খরচের অনেকটাই আমাকে দিতে হয়। শাশুড়ির হৃদ্‌রোগের ওষুধের খরচের অধিকাংশ আমাকে দিতে হয়। বেতন বন্ধ হলে কোথা থেকে পাব টাকা?”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSC Recruitment Case

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy