—প্রতীকী ছবি।
কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে বাতিল শিক্ষকের দলে পড়েছেন বেশ কিছু প্রতিবন্ধী শিক্ষকও। তাঁদের দাবি, তাঁরা যোগ্য হিসেবেই চাকরি করছিলেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর ২০১৬-র প্যানেলের সবার চাকরি বাতিল হওয়ায় তাঁরাও চাকরি হারিয়েছেন। যদিও বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
এই শিক্ষকদের প্রশ্ন, যদি মানবিকতার খাতিরে ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসের চাকরি বহাল থাকতে পারে, তা হলে তাঁদেরকেই বা কেন থাকবে না?
দৃষ্টিহীন শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের থেকে তাঁদের চাকরি পাওয়া অনেক কঠিন। প্রথমত, পরীক্ষার জন্য অনেক কষ্ট করে ‘রাইটার’ জোগাড় করতে হয়। পড়াশোনার জন্য অডিয়ো বুক সবসময় পাওয়া যায় না।
অল বেঙ্গল ব্লাইন্ড টিচার্স অ্যাসেসিয়েশেনের সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাঝির কথায়, ‘‘২০১৬-র এসএসসিতে প্রতিবন্ধী কোটায় শিক্ষকের সব আসন পূরণ হয়নি। ফলে অপেক্ষমান প্রার্থী না থাকায় প্রতিবন্ধী কোটায় দুর্নীতির সম্ভাবনা নেই। তবু কেন আমাদের সবার সঙ্গে এক বন্ধনীতে ফেলা হল?’’ তাঁর অভিযোগ, চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকেরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে দিল্লি গেলেও দৃষ্টিহীনদের সেই আর্থিক সঙ্গতি নেই।
মুর্শিদাবাদের একটি গ্রামের স্কুলের শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সাহা সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন। বলেন, ‘‘২০১৬-র এসএসসিতে অনেক কষ্টে রাইটার জোগাড় করে পরীক্ষা দিয়ে এই চাকরি পেয়েছি। অডিয়ো বুক ঠিক মতো পাইনি। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার কথা ভাবতেও পারি না।’’
৭৫ শতাংশ দৃষ্টিহীন অর্পণা মজুমদার হাওড়ার চামরাইলের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। বলেন, ‘‘গত চার বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। এখন যদি পুরো প্যানেল বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হয়, তা হলে ফের রাইটার জোগাড় করে পরীক্ষায় পাশ করতে পারব, তার নিশ্চয়তা কোথায়? এত বছর কাজ করার পরে আমাদের এখন অনেকে সন্দেহের চোখে দেখছে।’’
নরেন্দ্রপুর ব্রাইন্ড বয়েজ় অ্যাকাডেমির প্রাক্তণ অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষের কথায়, ‘‘বাতিল হওয়া প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের কাছে চাকরি ফিরে পাওয়াটা দ্বিগুণ চ্যালেঞ্জ। হাই কোর্টের ওই রায়ের পরে আমার যে ছাত্ররা ফোন করে তাদের চাকরি বাতিলের কথা জানিয়েছে, তারা সবাই ভাল ছাত্র। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy