Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Corona

কোভিড-কাঁটা সরিয়ে বিদেশযাত্রা হবে কি?

করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক উড়ান চলাচল বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। ফলে আশঙ্কা আরও বেড়েছে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

রূপকিনী সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৬:৩৪
Share: Save:

কোভিডের হানায় তালগোল পাকিয়ে গিয়েছিল বহু ভারতীয় পড়ুয়া ও গবেষকের বিদেশযাত্রার স্বপ্ন। এ বছরেও বিদেশ পাড়ি দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন অনেকেই। ফলে ভবিষ্যৎ নিয়েও দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে তাঁদের।

করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ৩১ মার্চ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক উড়ান চলাচল বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। ফলে আশঙ্কা আরও বেড়েছে। বিভিন্ন পড়ুয়া জানান, বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশে বসে পুরোপুরি অনলাইন ক্লাস করতে দিচ্ছে না। অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে দু’দেশের সময়ের ফারাকে নাকাল হচ্ছেন কেউ কেউ। বস্তুত, ভারতীয় পড়ুয়াদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে থাকে আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডার মতো দেশগুলি। সেখানেই সমস্যা বেশি।

ঈপ্সিতা মৌলিকের কথাই ধরা যাক। আমেরিকার ফোর্ডহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত মরসুমে ভর্তি হয়েও যেতে পারেননি তিনি। ঈপ্সিতা জানান, বিদেশে পড়তে গেলে আই২০ ফর্ম জমা দিতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী, সেই ফর্ম জমা দেওয়ার আগেই ভিসা জোগাড় করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু তাঁর ভিসার ইন্টারভিউয়ের তারিখের আগেই ফর্ম জমা দিতে হত। তাই সব বাতিল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের পুরোপুরি অনলাইন ক্লাসের অনুমতি নেই। কিছু ক্লাস সশরীরে করা বাধ্যতামূলক। তাই ক্লাস শুরু করতে পারিনি। এ বছর আবার ভিসার আবেদন করছি।” একই সমস্যায় পড়েছেন স্নিগ্ধা দাস। তিনিও ফের ভিসার অপেক্ষায় রয়েছেন।

নিউ জার্সির রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন শুভ্রজিৎ ঘোষ। কিন্তু অনলাইন ক্লাস করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন তিনি। শুভ্রজিতের কথায়, “গত বছর অগস্টে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ভিসা পাইনি। অনলাইন ক্লাস শুরু হলেও, দু’দেশের সময়ের ফারাক (টাইম জ়োন) বিরাট সমস্যা। মাঝরাতে ক্লাস করতে হচ্ছে। তা ছাড়া, সোশ্যাল সিকিয়োরিটি ন‌ম্বর এবং সে-দেশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকায় বৃত্তি পাচ্ছি না।’’ এ বছর তিনি ফের ভিসার আবেদন করলেও পরিস্থিতি অনিশ্চিত। শুভ্রজিতের বাড়ি থেকেও তাঁকে বিদেশে যেতে দিতে ভরসা পাচ্ছে না।

নানা ঝক্কি পোহানোর পরে হাম্বার বিজ়নেস স্কুলের ছাত্রী আলভেরা সালেক কানাডায় যেতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কানাডায় পৌঁছনোর পরে ১৪ দিন হোটেলে কোয়রান্টিনে থাকতে হয়েছিল।’’ যে প্রতিষ্ঠানে তিনি ভর্তি হয়েছেন, সেখান থেকে হোটেলের ওই খরচ পাননি বলে আলভেরার দাবি। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠান বন্ধ। কানাডায় গিয়েও তাঁকে অনলাইনেই ক্লাস করতে হচ্ছে।

সমস্যা না-কাটলেও ভিসা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সূত্র। আমেরিকান সেন্টার সূত্রেও দাবি করা হয়েছে, সংখ্যায় কম হলেও, ভিসা পাচ্ছেন পড়ুয়ারা। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক উড়ান ফের বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকছেই। এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে বলা হচ্ছে, অনিশ্চিত পরিস্থিতির জন্য কোনও সংস্থা নির্দিষ্ট সংখ্যক বিমান চালাতে পারছে না। ভারতীয় বিমান মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, দু’টি দেশের মধ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক উড়ান যাওয়া-আসার চুক্তির ভিত্তিতে কিছু উড়ান চলছিল। তবে তার সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু তাতেও ফের কোপ পড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education Corona COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE