Advertisement
১২ অক্টোবর ২০২৪
school

বছর শেষেও পোশাক নেই, ক্ষুব্ধ স্কুল

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, বছরের শেষে এখন পোশাক দেওয়া শুরু হলে সেই পোশাক পরে এই শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়ারা আর কত দিন স্কুলে আসতে পারবে?

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ০৭:২৯
Share: Save:

শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে বাকি সাকুল্যে ৫৫-৫৬ দিন। এখনও এক সেট করেও স্কুলপোশাক পায়নি রাজ্যের বহু স্কুল। এই নিয়ে অভিযোগে সরব শিক্ষক শিবির। বেশ কিছু স্কুল বছরের শেষ লগ্নে এসে এক সেট পোশাক পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই সব পোশাকের কাপড়ের মান ও মাপ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলপ্রধানেরা।

প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, বছরের শেষে এখন পোশাক দেওয়া শুরু হলে সেই পোশাক পরে এই শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়ারা আর কত দিন স্কুলে আসতে পারবে? পুজোর ছুটি শেষে স্কুল খুললেও পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে কিছু দিনের মধ্যেই। পরীক্ষার পরে অধিকাংশ পড়ুয়াই আর স্কুলে আসে না। আবার ঠিকমতোক্লাস শুরু হবে জানুয়ারির গোড়ায়। ফলে চলতি বছরটাও কার্যত সরকারি পোশাক ছাড়াই কাটল বা কাটতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ স্কুলপড়ুয়ার।

শিক্ষা দফতরের এক কর্তার দাবি, “বেশির ভাগ স্কুল এক সেট পোশাক পেয়ে গিয়েছে। নভেম্বরে দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে সব স্কুলে পোশাক পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।” যদিও কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানাচ্ছেন, তাঁদের পড়ুয়ারা এখনও এক সেট পোশাকও পায়নি।

কলকাতার সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জয়তী মজুমদার মিত্র জানান, এখনও এক সেট করেও পোশাক আসেনি। তিনি বলেন, “আমাদের স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়া গরিব পরিবারের। সারা বছর তারা পোশাকের জন্য অপেক্ষা করে ছিল। গত দু’বছর পোশাক পায়নি। ওদের কাছে যে-পোশাক রয়েছে, তা ছোট হয়ে গিয়েছে। কারও কারও পোশাক ছিঁড়েও গিয়েছে।” ওই প্রধান শিক্ষিকার প্রশ্ন, এখন বছর শেষে যদি পড়ুয়ারা এক সেট পোশাক পায়ও, চলতি বছরে সেই নতুন পোশাক পরার সুযোগ পাবে কী ভাবে?

প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু স্কুলে এখনও এক সেট পোশাকও আসেনি। চন্দন বলেন, “যে-সব স্কুলে এক সেট পোশাক এসেছে, সেখানে আমরা খবর নিয়ে দেখেছি, পোশাকের মান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। সব থেকে বেশি অভিযোগ, ছেলেদের হাফপ্যান্ট নিয়ে। নবম শ্রেণি থেকে স্কুলে ফুলপ্যান্ট পরার কথা। বছর শেষে অষ্টম শ্রেণির যে-সব পড়ুয়া হাফপ্যান্ট পেল, তারা তো এ বছর সেটা কার্যত পরতেই পারল না।”

পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, “পোশাক দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াতেই পরিকল্পনার অভাব আছে। ফলে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় হচ্ছে। এখন সব স্কুলে পড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক পরার ফরমান জারি হয়েছে। যারা সেই পোশাক পেয়েছে, তার সেলাইয়ের মান নিয়ে অভিযোগ বিস্তর। সেই পোশাক অনেকে পরতেই চাইছে না। তারা পুরনো স্কুলপোশাকেও ফিরতে পারছে না। এ এক নতুন সঙ্কট!”

এ দিকে পুরনো পোশাক বহাল রাখার দাবিতে সরব হয়েছে বহু স্কুল। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, ঐতিহ্যবাহী স্কুলগুলি যদি মনে করে তাদের পুরনো পোশাকের রং রেখে দেবে, সেটা বিবেচনা করে দেখা হবে। প্রশ্ন উঠছে, ঐতিহ্যবাহী স্কুল বলতে কাদের বোঝানো হচ্ছে? রাজ্যের বহু স্কুলই একশো বছর বা তারও বেশি পুরনো। তা হলে কাদের ঐতিহ্যবাহী বলে ধরা হবে? এই ব্যাপারে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এটি এখনও আলোচনার স্তরে রয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

school Education uniform
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE