কুস্তাউর স্টেশনে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।
আগে ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে ট্রেন চালাতে গিয়ে যে-দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তার ভিত্তিতে এ বার আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি রেল। তাই কুড়মি সমাজের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার পরেই খড়্গপুর-টাটা ও আদ্রা-চান্ডিল শাখায় মঙ্গলবার রাতে বেশ কিছু ট্রেন বাতিলের কথা জানিয়ে দেয় তারা। বুধবার ইএমইউ এবং এক্সপ্রেস মিলিয়ে ৬৬টি ট্রেন বাতিলের পাশাপাশি ১২টি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে। পরপর ট্রেন বাতিলের জেরে খড়্গপুর-টাটা ও পুরুলিয়ামুখী যাত্রীদের বড় অংশকে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। পরিস্থিতি আঁচ করে আজ, বৃহস্পতিবারেও ৭৮টি ট্রেন বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে সাতটি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পূর্বঘোষিত ‘রেল টেকা ডহর ছেঁকা’ কর্মসূচিতে এ দিন রেললাইনে বসে পড়েন কুড়মিরা। খড়্গপুরের খেমাশুলিতে জাতীয় সড়কের সঙ্গে সঙ্গে চলে রেল অবরোধও। তার জেরে টাটানগর-খড়্গপুর পথে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে কলাইকুন্ডায় কুড়মি নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি ও পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। আলোচনায় ডাকা হয় দুই সংগঠনের নেতাদের। তাতে বরফ গলেনি। তফসিলি জাতি থেকে জনজাতিতে উত্তীর্ণ হতে চান কুড়মিরা। রাজ্য সরকারের তরফে সেই বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট পাঠানোর আগে পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের জেলা সভাপতি কমলেশ মাহাতো ও কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নেতা রাজেশ মাহাতো।
রেল সূত্রের খবর, বছর চারেক আগে এই ধরনের অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা সত্ত্বেও ট্রেন চালিয়ে গুরুতর সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল। বিভিন্ন ট্রেন মাঝপথে টানা ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আটকে থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে ওঠে। দূরপাল্লার বহু ট্রেনে জল ফুরিয়ে যায়। খাবারের অভাবে এবং বাতানুকূল যন্ত্রের সমস্যায় নাকাল হন যাত্রীরা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক কর্তা জানান, যে-সব দাবিতে অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে, সেগুলি কোনও ভাবেই রেলের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এই অবস্থায় প্রশাসনিক আলোচনায় জট না-খুললে রেলের তরফে কিছুই করার নেই। রেলের দিক থেকে ট্রেন চালানোর পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy