Advertisement
E-Paper

Telugu Deepak: অবশেষে মুক্তি, তেলুগু দীপক ফিরছেন গ্রামে

কথা বলেন মূলত ইংরেজিতে। তবে এত দিনে কমবেশি বাংলাও শিখে নিয়েছেন। এটাও জানেন যে, সোমবার বাংলায় দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২১ ০৬:২৬
তেলুগু দীপক

তেলুগু দীপক

সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘যাত্রাপথে’ গল্পে এক কয়েদির কথা আছে, যিনি নিজের পরিচয় ভুলে নিজেকে শুধু ‘কয়েদি নম্বর ৪৫’ বলে উল্লেখ করতেন। কারাজীবনে তাঁকে ‘তেলুগু দীপক’ বা ‘তেলগি দীপক’ বলে বারংবার উল্লেখ করা হলেও ভি বেঙ্কটেশ্বরা রেড্ডি অবশ্য আত্মপরিচয় ভোলেননি। ভোলেননি নিজের গ্রামকেও। তাই দীর্ঘ এগারো বছর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলে কাটানোর পরে মুক্তি পেয়ে আজ, মঙ্গলবার সকালে প্রথমেই তিনি উড়ে যাচ্ছেন অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরের কোপ্পন গ্রামে, তাঁর আদিবাড়িতে।

কথা বলেন মূলত ইংরেজিতে। তবে এত দিনে কমবেশি বাংলাও শিখে নিয়েছেন। এটাও জানেন যে, সোমবার বাংলায় দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে। এক দশকের বন্দিদশা কাটিয়ে মাতৃশক্তির আরাধনায় মুখর মহাষষ্ঠীর দুপুরেই জেল থেকে ছাড়া পেলেন দীপক। যদিও সদ্য মাতৃবিয়োগের দুঃসংবাদ তাঁর মুক্তির আনন্দ অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে।

এ রাজ্যের পুলিশ বেঙ্কটেশের পরিচয় পেয়েছিল মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষ নেতা তেলগি বা তেলুগু দীপক নামেই। বাম জমানার শেষ বেলায়, ২০১০ সালের ৩ মার্চ ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ সরশুনা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন, ইউএপিএ বা বেআইনি কাজকর্ম প্রতিরোধ আইন এবং অন্যান্য আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু হয়। তার পর থেকেই দীপক বন্দি ছিলেন এ রাজ্যের জেলে। সম্প্রতি স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে জেলে অনশনও করেন তিনি।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ওই মামলায় বেকসুর খালাস পান দীপক। অন্য তিনটি বিচারাধীন মামলাতেও জামিন পেয়েছেন। সরাসরি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি তিনি। তবে তাঁর সঙ্গী মানবাধিকার কর্মীদের মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন দীপক। মানবাধিকার সংগঠন সিআরপিসি-র তরফে শুভদীপ ঘোষ জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর দীপকের জামিনের দিনেই গ্রামের বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে তাঁর মা রামা কোটাম্মার। ১০ দিন কোমায় ছিলেন বৃদ্ধা। তাঁর বাবা সেসা রেড্ডি আগেই প্রয়াত হয়েছেন। মা-বাবার চিকিৎসা করানোর সুযোগ না-পেয়ে দীপক অত্যন্ত বিমর্ষ হয়ে পড়েন। তাই জেল থেকে বেরিয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব দীপক প্রথমেই যেতে চাইছেন তাঁর গ্রামের বাড়িতে। সেখানে কাকার পরিবারের সঙ্গেই থাকবেন। এর পরে কী করবেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।

সিআরপিসি-র তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম থেকে সমাজকর্মী ছিলেন দীপক। ২০১০-এর ৩ মার্চ তাঁকে গ্রেফতারের কথা বলা হলেও আদতে পুলিশ হাওড়া স্টেশন থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ১ মার্চ। দীপক কোনও মাওবাদী কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে এ দিন দাবি করেছে ওই মানবাধিকার সংগঠন।

দীপকের আইনজীবী শুভাশিস রায় এ দিন বলেন, ‘‘আমার মক্কেলের নাম ভি বেঙ্কটেশ রেড্ডি। পুলিশ সেই পরিচয় ভুলিয়ে তাঁকে তেলগি দীপক বলে প্রমাণ করতে চেয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব ধরনের অভিযোগ আদালতে নস্যাৎ হয়ে গিয়েছে।’’

পুলিশি সূত্রের খবর, অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র দীপক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় হস্টেল ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। বাম আন্দোলনে নেমে ছেড়েছিলেন ঘর। কলকাতায় ছেলের গ্রেফতারির পরে বাবা-মা জানতে পারেন, বেঁচে আছেন দীপক। তবে তত দিনে তাঁর নাম বদলে হয়ে গিয়েছে তেলগি বা তেলুগু দীপক। পুলিশের দাবি, মাওবাদী আন্দোলনে নেমে ওই নামই নিয়েছিলেন তিনি।

Venkateswara Reddy Sedition Charge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy