Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সব অঙ্ক গুলিয়ে ভয় দেখাচ্ছে বৃষ্টি

স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, নাকি সোনার পাথরবাটি! সারা দেশে জুন থেকে অক্টোবর কত বৃষ্টি হয় তার হিসেব মৌসম ভবনের কাছে রয়েছে। বৃষ্টিপাত তার শতকরা ৯৫ ভাগ হলেই তাকে স্বাভাবিক বৃষ্টি বলে।

আঁধি: দুপুরে ধুলোর ঝড়। মঙ্গলবার বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

আঁধি: দুপুরে ধুলোর ঝড়। মঙ্গলবার বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ

দেবদূত ঘোষঠাকুর
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০৪:০১
Share: Save:

স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, নাকি সোনার পাথরবাটি!

সারা দেশে জুন থেকে অক্টোবর কত বৃষ্টি হয় তার হিসেব মৌসম ভবনের কাছে রয়েছে। বৃষ্টিপাত তার শতকরা ৯৫ ভাগ হলেই তাকে স্বাভাবিক বৃষ্টি বলে। কিন্তু তার মানেই যে দেশের সব অঞ্চলে সমান বৃষ্টি হবে বা নির্ঘণ্ট মেনে বর্ষা আসবে, তার ঠিক নেই।

হয়তো পূর্ব ভারতে ঢেলে বৃষ্টি হল, পশ্চিম ভারত তেমন বৃষ্টি পেল না। কিংবা জুন-জুলাইয়ে তেমন বৃষ্টি হল না, ভেসে গেল সেপ্টেম্বর-অক্টোবর। অথচ হরে-দরে বর্ষার পাঁচ মাসে বৃষ্টির হিসেব স্বাভাবিকই থাকল। এক আবহবিদের ব্যাখ্যা, গত বছর দেশে স্বাভাবিক বর্ষা হয়েছে। কোথাও কোথাও ফসল উপচে পড়েছে। আবার দক্ষিণ ভারতের দু’টি রাজ্যে অনাবৃষ্টির ফলে কৃষকেরা আশানুরূপ ফসলই পাননি। কিন্তু মৌসম ভবনের তথ্যপঞ্জিতে ২০১৬ স্বাভাবিক বর্ষার বছর হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে।

কোথায়, কবে, কতটা বৃষ্টি হবে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু কোন অঞ্চলে কবে নাগাদ বর্ষা ঢুকবে, কোন মাসে কত বৃষ্টি হবে— ১০০ বছরের তথ্যের ভিত্তিতে তার একটা ক্যালেন্ডার রয়েছে। সমস্যা হল, গত ২০-২২ বছরে বিশ্ব জুড়ে জলবায়ুর যে দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে, তাতে সেই নির্ঘণ্ট অনেকটাই ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। জুলাইয়ের বৃষ্টি চলে যাচ্ছে অগস্টে। অগস্টেরটা সেপ্টেম্বরে। কিন্তু কৃষকেরা চাষ করছেন পুরনো নির্ঘণ্ট মেনেই। তাঁদের কাছে এই পরিবর্তনের খবর সঠিক ভাবে পৌঁছচ্ছে না। তাই খাতায়-কলমে বৃষ্টি স্বাভাবিক হলেও কৃষকদের মুখে হাসি ফুটছে না।

আরও পড়ুন:অবশেষে নড়ল পুলিশ, তদন্তে তৈরি বিশেষ দল

তাই সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ। লিখেছেন, ‘আবহাওয়ার খেয়ালি চরিত্রের ফলে যে কোনও রাজ্যই প্রতিকূল অবস্থার মুখোমুখি হতে পারে। তাই আগে থেকেই খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হচ্ছে।’ কৃষি মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস নির্ধারণের প্রযুক্তি এবং কৃষকদের সেই অনুযায়ী পরামর্শ দানের পদ্ধতিও তেমন বদলায়নি। তাই কৃষকদের যে সময়ে বীজতলা তৈরি করতে বলা হচ্ছে, সেই সময়ে বৃষ্টি থাকছে না।

মৌসম ভবন বলছে, দেশের কোন অঞ্চলে কোন সময়ে কতটা বৃষ্টি হতে পারে, জুন মাসের পূর্বাভাসে তা জানিয়ে দেবে তারা। সেই অনুযায়ী রাজ্যগুলি কৃষকদের জন্য নির্ঘণ্ট তৈরি করতে পারে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে অদলবদল ঘটতে পারে সেই পূর্বাভাসেরও।

সহ প্রতিবেদন: প্রেমাংশু চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Monsoon Rainfall Mausam Bhawan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE