ডাক্তারির স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে এ বার থেকে কাট-অফ মার্কসের পার্সেন্টাইল শূন্য করার কথা ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের মেডিক্যাল কাউন্সেলিং কমিটি (এমসিসি)। এত দিন এমডি-এমএসে ভর্তি হতে গেলে নিট-পিজি পরীক্ষায় ৫০ পার্সেন্টাইল নম্বর পেতেই হত। সংরক্ষিত কোটায় সেটি ছিল ৪০। এ বার তা-ই শূন্য হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন।
চলতি বছরে দুই দফায় স্নাতকোত্তর স্তরে কাউন্সেলিংয়ের পরেও সব আসন ভরেনি। বিশেষত বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের আসন ফাঁকা থাকছিল। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-সহ আরও কয়েকটি সংগঠন কাট-অফ মার্কসের পার্সেন্টাইল কমাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু এমসিসি এ দিন বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেটি শূন্য করে দেয়। চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রতি বছরই কাট-অফ নম্বর শিথিল করা হয়। কিন্তু শূন্য করার অর্থ ভারতীয় মেডিক্যাল শিক্ষার গৌরবময় স্থানকে এক ধাক্কায় অতলে তলিয়ে দেওয়া।’’
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, শূন্য পার্সেন্টাইলের অর্থ কখনওই শূন্য শতাংশ বা প্রাপ্ত নম্বর শূন্য নয়। ৮০০ নম্বরের পরীক্ষায় যে পরীক্ষার্থীর নম্বর সর্বনিম্ন, সেটিকে শূন্য পার্সেন্টাইল বলা হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টরসের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘শূন্য পার্সেন্টাইল মানে সবচেয়ে কম নম্বর পাওয়া, এমনকি সেটা শূন্য হলেও কেউ এমডি-এমএস পড়ার সুযোগ পেতে পারে। অর্থাৎ মেধা নয়, পয়সা থাকলেই ডাক্তারিতে সুযোগ। এতে চিকিৎসা-শিক্ষা ব্যবসায়ীদের মুনাফার আরও সুযোগ করে দেওয়া হল।’’
ডাক্তারিতে দেশের প্রায় ৪৫ হাজার স্নাতকোত্তর আসনের মধ্যে ১৯ হাজারই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে। মূলত বেসরকারি আসনগুলিই ফাঁকা থাকে। অভিযোগ, বেসরকারি কলেজকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এই ব্যবস্থা। মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র জানান, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই নোটিস প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। ছাত্র সংগঠন এআইডিএসও-র রাজ্য সহ-সভাপতি তথা রাজ্য মেডিক্যাল ইউনিটের আহ্বায়ক সামস্ মুসাফির বলেন, ‘‘ক্রমাগত মেডিক্যাল শিক্ষাকে কর্পোরেটের হাতে তুলে দিচ্ছে কেন্দ্র। এ বার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির মাপকাঠি শিথিল করা হল। এতে সমাজের ক্ষতি হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)