Advertisement
E-Paper

চিকিৎসার গাফিলতি, ২২ বছর পরে মিলল ক্ষতিপূরণ

আগামী এক মাসের মধ্যে দীননাথের পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও  প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০৪:২৬
দীননাথ চৌধুরী

দীননাথ চৌধুরী

২২ বছর শেষে যুদ্ধ জয়!

সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছিল কিশোর দীননাথ চৌধুরীর। অবশেষে সেই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ পেল চন্দননগরের গোন্দলপাড়ার চৌধুরী পরিবার। বুধবার এই ঘটনায় চন্দননগর মহকুমা হাসপাতাল এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে ১৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হুগলির ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। আগামী এক মাসের মধ্যে দীননাথের পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে।

১৯৯৬ সালের ১২ জুন বিকেলে বাড়ির কাছে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া দীননাথের হাতে কুকুরে কামড়ে দিয়েছিল। পরের দিনই তাকে চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৮ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়া হয় দীননাথকে। এর পর ৬ অগস্ট অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। স্থানীয় চিকিৎসক জানান, তার জলাতঙ্ক হয়েছে। দু’দিন পরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় দীননাথের।

এই ঘটনায় হুগলির ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করে কিশোরের পরিবার। কিন্তু প্রমাণের অভাবে মামলা খারিজ হয়। এই পরিস্থিতিতে এপিডিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃতের পরিবার। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করে এপিডিআর। অভিযোগ, দীননাথকে যে টিকা দেওয়া হয়েছিল, তা রেফ্রিজারেটরে রাখা ছিল না। এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার নির্দেশ দেয় মানবাধিকার কমিশন। সেই কমিটির প্রথম রিপোর্টে ‘সন্তুষ্ট’ ছিল না তারা। কমিশনের নির্দেশে আর একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করতে হয় রাজ্য সরকারকে।

আরও পড়ুন: পরিবার মুখ ফিরিয়েছে, এইচআইভি আক্রান্ত কিশোরের পাশে দাঁড়াল হাসপাতাল

কমিটি জানায়, দীননাথকে দেওয়া টিকায় গোলমাল ছিল। এর পরে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়। মামলা গড়ায় জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন, সুপ্রিম কোর্টে। ২০১৬ সালে হুগলি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা ফিরে আসে। সেই মামলার রায়েই এ দিন ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দীননাথের পরিবারের হয়ে সওয়াল করেন এপিডিআরের হুগলি শাখার সদস্য বাপি দাশগুপ্ত। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার মদ খেয়ে মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে। অথচ চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ চাইতে সুপ্রিম কোর্টে যেতে হয়!’’

গোন্দলপাড়া চটকলে কাজ করতেন দীননাথের বাবা বদ্রী চৌধুরী। গত জানুয়ারি মাসে মৃত্যু হয় তাঁর। আদালতের রায়ের পর দীননাথের মা শান্তিদেবী বলেন, ‘‘টাকা পেয়ে আর কী করব! ছেলেটা তো আর ফিরবে না।’’ চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালের বর্তমান সুপার জগন্নাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘রায়ের প্রতিলিপি না দেখে এ নিয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।’’

Medical negligence চিকিৎসার গাফিলতি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy