লড়াই: বিস্ফোরণস্থলে আগুন নেভানোর চেষ্টা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
মাঝে দু’বছরের ব্যবধান। ফের বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরে। পিংলার পরে এ বারের ঘটনাস্থল খাস জেলার সদর শহর।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের বিবিগঞ্জের ধুনুরি বস্তির একটি বাড়িতে বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণ হয় বলে অভিযোগ। দুই মহিলা ঝলসে যান। জখম মমতাজ বেগম এবং মামনি বিবিকে আনা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে। চিকিত্সকেরা মমতাজকে (২৪) মৃত বলে ঘোষণা করেন। মামনির অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শচীন মক্কর। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতে বাজি ছিল। উৎসবের মরসুমে বিক্রির জন্যই বাজি মজুত করা হয়েছিল।’’ এলাকার কাউন্সিলর শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে।” বিস্ফোরণে জখম মামনির স্বামী শেখ শাহজাদাকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মেদিনীপুরের এই এলাকায় বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির অভিযোগ নতুন নয়। এক সময় এলাকাবাসীও সরব হয়েছিলেন। অবশ্য বাজি ব্যবসা বন্ধ হয়নি। পুলিশও তেমন পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশের দাবি, দিন কয়েক আগেও ওই এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। তখন কোনও বেআইনি বাজি মেলেনি। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “সামনে উত্সবের মরসুম। হতে পারে দিন কয়েক আগে ফের ওই বাড়িতে বাজি তৈরির মশলা ঢোকানো হয়।”
২০১৫ সালের মে মাসে পিংলার ব্রাহ্মণবাড়ে ভয়াবহ বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। জখম হয়েছিল ৪ জন। প্রথমে পুলিশ, পরে সিআইডি ঘটনার তদন্ত শুরু করে। বেআইনি বাজি ব্যবসায় জড়িতদের একে একে গ্রেফতারও করা হয়।
মেদিনীপুরে এ দিনের বিস্ফোরণের তীব্রতাও খুব কম ছিল না। প্রায় এক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বিস্ফোরণের আওয়াজ পৌঁছয়। তীব্র শব্দে আশেপাশের কয়েকটি বাড়ির কাচ ভেঙেছে। যে বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেটি দোতলা। বিস্ফোরণ হয় একতলায়। তবে আগুন
বেশি ছড়ায়নি।
দমকলের একটি ইঞ্জিন আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের এক সূত্রে খবর, ওই বাড়ির সামনে এক কুয়ো রয়েছে। কুয়োর পাশেই দুই মহিলা ঝলসানো অবস্থায় পড়েছিলেন। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছিলেন, “শুনেছিলাম ওখানে বেআইনি বাজির কারবার চলে। প্রথমে বিকট শব্দ শুনি, তারপর পোড়া বারুদের গন্ধ নাকে আসে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy