Advertisement
E-Paper

ভ্যানোয় ১১ যাত্রী, উল্টে মৃত দু’জন

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পটাশপুরের অমরপুর থেকে একটি মোটরচালিত ভ্যানোয় ঢালাই মেশিন নিয়ে সবংয়ের তেমাথানির দিকে যাওয়ার সময় ওএনজিসি মোড়ে রাস্তার গর্তে ভ্যানোর চাকা আটকে যায়। তার জেরেই উল্টে যায় ভ্যানোটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৩
সুকোমল মাইতি (বাঁ দিকে, অমিতকুমার সাউ। নিজস্ব চিত্র

সুকোমল মাইতি (বাঁ দিকে, অমিতকুমার সাউ। নিজস্ব চিত্র

যাত্রী তোলার কথাই নয়, অথচ সেই ভ্যানোতেই উঠেছিলেন ১১ জন! ঢালাই মেশিন নিয়ে তাঁরা সোমবার পূর্ব মেদিনীপুর থেকে পটাশপুর থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের তেমাথানিতে যাচ্ছিলেন। সবংয়ের দণ্ডরা গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদকুড়ি থেকে বেলটির মাঝে ওএনজিসি মোড়ে ভ্যানো উল্টে মৃত্যু হল দু’জনের। জখম চার জন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পটাশপুরের অমরপুর থেকে একটি মোটরচালিত ভ্যানোয় ঢালাই মেশিন নিয়ে সবংয়ের তেমাথানির দিকে যাওয়ার সময় ওএনজিসি মোড়ে রাস্তার গর্তে ভ্যানোর চাকা আটকে যায়। তার জেরেই উল্টে যায় ভ্যানোটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুকোমল মাইতি (৩৯) ও অমিতকুমার সাউয়ের (২৬)। সুকোমল পটাশপুরের বেলদার বাসিন্দা। আর অমিতের বাড়ি নইপুর কালোবাড়ে। দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন আরও চারজন। তাঁদের মধ্যে একজনের আঘাত গুরুতর থাকায় তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পরে বেহাল রাস্তা মেরামতির দাবিতে পথ অবরোধ করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা। সেই সঙ্গে অনুমতি না থাকলেও ভ্যানোয় যাত্রী পরিবহণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অনুমতি ছাড়া হামেশাই ভ্যানোয় যাত্রী পরিবহণ চলে। তেমাথানি-পটাশপুর রাস্তার চাঁদকুড়ি থেকে বাদলপুর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার অংশের হাল খারাপ থাকায় এখন গর্তে পড়ে উল্টে যায় ভ্যানোটি। স্থানীয় বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক শান্তুনু অধিকারী বলেন, “চাঁদকুড়ি এলাকায় রাস্তায় যে ভাবে বড়-বড় গর্ত হয়েছে তাতে দুর্ঘটনা আরও বাড়ছে। কয়েকদিন আগেই তো গর্তে পড়ে মোটরবাইক উল্টে যাওয়ায় এক মহিলা জখম হয়েছিলেন। এ ছাড়া ভ্যানোয় লাগামছাড়া যাত্রী পরিবহণ তো আছেই। প্রশাসনের দেখা উচিত।”

টোটোয় যাত্রী তোলা হলেও প্রশাসন নজরদারি চালায় না কেন? জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদার বলছেন, “স্থানীয় প্রশাসন একটি নম্বর দিয়ে ভ্যানো পথে নামার অনুমতি দিতে পারে। কিন্তু তাতে কোনওভাবেই যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামে কিছু ভ্যানো চলে বলে শুনেছি। সেখানে হয়তো কোথাও যাত্রীও উঠে পড়ছে। কিন্তু সত্যি বলতে আমাদের এমন পরিকাঠামো নেই যে প্রতিটি গ্রামে নজরদারি চালাব।”

ভ্যানোর অনিয়মের পাশাপাশি বেহাল রাস্তা নিয়েও ফুঁসছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দাবি, গত বছর তেমাথানি-পটাশপুর রাস্তার সংস্কার হলেও বাদ থেকে যায় চাঁদকুড়ি থেকে বাদলপুর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার অংশের কাজ। ওই অংশে রাস্তা ক্রমেই বেহাল হয়েছে। তার উপর নিয়ম না মেনে ভ্যানোয় যাত্রী পরিবহণের কারণেই
দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনার খবরে ভেঙে পড়েছেন মৃতদের পরিজনেরা। বাড়ির একমাত্র ছেলে সুকোমলের উপার্জনেই চলত গোটা পরিবার। সুকোমলের বাবা সুজনবিহারী মাইতি বলেন, “প্রতিদিনের মতো ছেলে কাজে বেরিয়েছিল। কিন্তু এ ভাবে দুর্ঘটনা হবে ভাবিনি।” বাড়ির একমাত্র রোজগেরে অমিত বছর চারেক আগে বিয়ে করেন। তাঁর বাবা প্রদীপকুমার সাউ বলেন, “ভ্যানোয় যাতায়াত পছন্দ করি না। ওকে বোঝাতাম। সেই ভ্যানোতেই ছেলের ক্ষতি হয়ে গেল।”

passengers Accident death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy