Advertisement
E-Paper

জন্মদিনের পৃথক জমায়েতে জল্পনা

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী এলাকা মেদিনীপুরে এমন ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়েছে।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০০:০১
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

প্রায় একই সময়ে বিজেপির দুই নেতা-নেত্রীর জন্মদিন পালন হল দুই পৃথক জায়গায়। একদিকে দেখা গেল আরএসএস ঘনিষ্ঠদের। অন্যদিকে পুরনো কর্মীদের ভিড়।

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী এলাকা মেদিনীপুরে এমন ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়েছে। বিজেপিতে নতুন-পুরনো দ্বন্দ্ব আছেই। লোকসভা ভোটের পরে তা আরও বেড়েছে। অনেকের দাবি, জন্মদিন পালন ঘিরে পৃথক জমায়েতে সেই দ্বন্দ্বই ফের প্রকাশ্যে এল। করোনা-কালে এই ভাবে জমায়েত করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দিলীপ ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠী নেই। তবে এই সময়ে দলের সবাইকেই জমায়েত করতে বারণ করা হয়েছে। কী হয়েছে খোঁজ নেব।’’

শনিবার সন্ধ্যায় বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা দলের রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন হয় মেদিনীপুরে কেরানিতলার এক সভাঘরে। অন্য দিকে, রামনবমী উৎসব সমিতির অন্তর্গত নারীশক্তি বাহিনীর মেদিনীপুরের প্রমুখ শর্মিষ্ঠা গুছাইতের জন্মদিন পালন হয়েছে শরৎপল্লির এক সভাঘরে। শর্মিষ্ঠা বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর গুছাইতের স্ত্রী। দলের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিজেপিতে সাধারণ সম্পাদক পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রামনবমী সমিতির উদ্যোগেই শর্মিষ্ঠার জন্মদিন পালন হয়েছে। আর তুষারের জন্মদিন পালন হয়েছে মূলত বিজেপির যুবমোর্চার কর্মীদের উদ্যোগে।

শর্মিষ্ঠার জন্মদিনে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) বিভাগ সঙ্ঘচালক চন্দনকান্তি ভুঁইয়া প্রমুখ। সেখানে দেখা গিয়েছে সুনীতা বেরার মতো দলের নতুনদের। সুনীতা প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর। পরে বিজেপিতে এসেছেন। আবার তুষারের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দলের পুরনো কর্মীদের ভিড় ছিল। ছিলেন শুভজিৎ রায়, সোমনাথ সিংহ, অরূপ দাস, আশীর্বাদ ভৌমিক, সুমন্ত মণ্ডল প্রমুখ। ছিলেন মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ শিবু পাণিগ্রাহীও। শিবু বিজেপির জেলা সহ- সভাপতি।

জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, দলের সাংগঠনিক বিন্যাস নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ রয়েছে। একাংশ কর্মীর দাবি, ধুমধাম করে তুষারের জন্মদিন পালন সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, দলে বিপুল উত্থান ঘটেছে শমিষ্ঠার স্বামী শঙ্করের। তিনি শমিত-ঘনিষ্ঠ।

শমিত-ঘনিষ্ঠ এক জেলা নেতার অবশ্য দাবি, ‘‘কাউকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়নি। দল বড় হচ্ছে। নতুন-পুরনো ভারসাম্য রেখেই নতুন জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে।’’ রামনবমী সমিতির অনুষ্ঠানে চন্দনকান্তি এবং শমিতকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছে। ওই সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মলয় দাস বলেন, ‘‘সমিতির জন্মলগ্ন থেকে ওঁরা পাশে থেকেছেন। তাই এই সংবর্ধনা।’’ যুব মোর্চার জেলা সভাপতি আশীর্বাদ এই সমিতির যুগ্ম সম্পাদক। তিনি তুষারের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে থাকলেও এখানে অবশ্য আসেননি।

দলের অন্দরে গুঞ্জন, বিধানসভা নির্বাচনে মেদিনীপুরের সম্ভাব্য প্রার্থীর দৌড়ে না কি রয়েছেন শমিত, তুষার। কার পাল্লা ভারী, শনিবার নাকি তারও ‘মহড়া’ হল! তবে দুই নেতার কেউই এর মধ্যে কোন্দল বা জল্পনার কিছু দেখছেন না। রবিবার বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার বলেন, ‘‘দলের কর্মীরাই ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। এত করে ওঁরা ডেকেছেন যে না গিয়ে পারিনি!’’

জেলা সভাপতি শমিতেরও দাবি, ‘‘এখানে কোন্দলের কোনও ব্যাপার নেই।’’ তাহলে তুষারের জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে আপনাকে দেখা গেল না? শমিতের উত্তর, ‘‘আমার সম্মতি নিয়েই ওই অনুষ্ঠান হয়েছে। আমার যাওয়ারও কথা ছিল। তবে একই সময়ে সঙ্ঘের একটা অনুষ্ঠান ছিল। পরে তুষারদার সঙ্গে দেখা হয়েছে। ওঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি।’’

সব দেখে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে পরে লড়বে! আগে ওরা নিজেদের ঝামেলা মেটাক!’’

BJP Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy