Advertisement
E-Paper

বেড়ানোর নেশায় ঘরছুট দুই ছাত্রের খোঁজ হাওড়া স্টেশনে

দুই ছাত্রের একজনকে শুক্রবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হলেও আর একজন এখনও হোমে। তাকে আগামী বুধবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৫
পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছয় দুই ছাত্র। —ফাইলচিত্র।

পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছয় দুই ছাত্র। —ফাইলচিত্র।

স্কুল যাওয়ার পথে গত সোমবার নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল পাঁশকুড়া থানার মোহনপুর গ্রামের দুই ছাত্র। সম্পর্কে তারা দুই ভাই। বাড়ি থেকে জামাকাপড় ও আট হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা। স্থানীয় একটি স্কুলের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ওই দুই পড়ুয়ার স্কুলের পোশাক ও খাতাপত্র উদ্ধার হয়েছিল এলাকা থেকেই। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খোঁজখবর শুরু করেছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত সন্ধান মিলল দু’জনের।

দুই ছাত্রের একজনকে শুক্রবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হলেও আর একজন এখনও হোমে। তাকে আগামী বুধবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় ওই দুই ছাত্র জানায় গত সোমবার তারা স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোনোর পর স্কুলের পোশাক পাল্টে অন্য জামাকপড় পরে নেয়। বইখাতার সঙ্গে স্কুলের পোশাক ব্যাগে রেখে তা ফেলে আসে। এর পর তারা পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছয়। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ চেন্নাই যাওয়ার টিকিট কেটে উঠে পড়ে চেন্নাইগামী হাওড়া-চেন্নাই মেলে। পরদিন, মঙ্গলবার চেন্নাই পৌঁছনোর পর দু’জনেই বেকায়দায় পড়ে যায়। কারণ সেখানকার লোকজনের কথা তারা বুঝতে পারছিল না। একই ভাবে তাদের বাংলা কথাও কেউ বুঝতে পারছিল না। অবস্থা বেগতিক দেখে তারা হাওড়ায় ফেরা ঠিক করে এবং ওই ট্রেনেই উঠে পড়ে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই দুই ছাত্র হাওড়া স্টেশনে নামে। স্টেশনে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে হাওড়া জিআরপি থানার পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেই সময় পুলিশের হাত থেকে ছুটে পালিয়ে যায় একজন। অন্যজনকে হাওড়া জিআরপি থানার পুলিশ লিলুয়া হোমে পাঠিয়ে দেয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাড়ির ঠিকানা জানতে পারে পুলিশ।

এর পর হাওড়া জিআরপি পাঁশকুড়া থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ওই দিনই হাওড়ার জিআরপির হাত থেকে পালানো ছাত্রকে পাঁশকুড়া স্টেশনে ধরে ফেলে পুলিশ। তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। খবর দেওয়া হয় তার পরিবারে। শুক্রবার তাকে তমলুক আদালতে গোপন জবানবন্দির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অন্যজনকে আনতে এ দিনই পাঁশকুড়া থানার পুলিশের একটি দল পৌঁছে যায় লিলুয়া হোমে। তবে কিছু আইনি প্রক্রিয়া থাকায় আগামী বুধবার তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এদিন বাড়িতে ফেরা ছাত্রটি জানায়, গত রবিবার তাকে তার দাদা (আর এক ছাত্র) কোথাও ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে। সেইমতো তার দাদা বাড়ির আলমারি থেকে ৮ হাজার টাকা নেয় এবং দু’জনে স্কুলে যাবে বলে বেরিয়ে পড়ে। তার দাবি, এর আগেও একাধিকবার তার দাদা তাকে মেচেদা ও আশপাশের এলাকায় ঘুরতে নিয়ে গিয়েছে। তবে এবার যে তারা একেবারে চেন্নাই পৌঁছে যাবে, ভাবেনি।

ছেলেদের ফিরে পেয়ে খুশি দুই পরিবারও। তাদের বক্তব্য, ‘‘পুলিশকে ধন্যবাদ আমাদের ছেলেদের ঘরে ফিরিয়ে আনার জন্য।’’

ঘটনার তদন্তকারী অফিসার নিরাপদ দোলই বলেন, ‘‘ওই দুই ছাত্র নেহাতই ঘোরার নেশাতেই চেন্নাই পৌঁছে গিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। তবে এটা স্বস্তির যে তারা কোনও অসাধু ব্যক্তির পাল্লায় পড়েনি।’’

Panskura Howrah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy