মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন বন্দির মুক্তি হল শুক্রবার। স্টেট সেন্টেন্স রিভিউ বোর্ড (এসএসআরবি)-এর সুপারিশে তিন জন সাজাপ্রাপ্ত আসামির মুক্তি হয়। সাধু রায় ২১ বছর ধরে সংশোধনাগারে ছিলেন। তিনি দৃষ্টিহীন। ১৮ বছর ধরে ছিলেন কৃষ্ণপদকুমার এবং ২৩ বছর ধরে ছিলেন রতন রুইদাস। রতনের বাড়ি আসানসোল এলাকায়, বাকি দু’জনের বাড়ি পুরুলিয়া জেলায়। ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি (ডিএলএসএ) সচিব শহিদ পারভেজ বলেন, “রাজ্য সাজা পর্যালোচনা বোর্ডের সুপারিশে তিন জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।”
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি শুক্রবার মুক্তি পেলেন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার বা সেন্ট্রাল জেল থেকে। তিন আসামির ব্যবহার বা আচরণে মুগ্ধ হয়ে বছরখানেক আগেই তাঁদের মুক্তির সুপারিশ করেছিলেন মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ বা ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথোরিটির সহযোগিতায় পশ্চিমবঙ্গের ‘স্টেট সেন্টেন্স রিভিউ বোর্ড’ এই তিন জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির জেল-মুক্তি সুপারিশ অনুমোদন করে। অবশেষে শুক্রবার দুপুরে জেল থেকে মুক্ত হন আসানসোলের রতন এবং পুরুলিয়ার সাধু ও কৃষ্ণপদ।
জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার বাসিন্দা সাধু বচসার জেরে এক প্রতিবেশীকে খুন করেছিলেন। প্রায় ২১ বছর ধরে ধরে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিলেন তিনি। দু'চোখেই এখন আর দেখতে পান না বছর ৬৫-র সাধু। পুরুলিয়ারই বাসিন্দা কৃষ্ণপদ প্রায় ১৮ বছর ধরে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ছিলেন। তিনিও প্রতিবেশীকে খুনের ঘটনায় সাজা পান। শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের হাত ধরে বাড়ি ফিরলেন বছর ৭০-র কৃষ্ণপদ। অন্য দিকে, আসানসোলের বারাবনী থানা এলাকার বাসিন্দা রতন ২৩ বছর ধরে সংশোধনাগারে ছিলেন। জমি সংক্রান্ত বিবাদে বচসা থেকে হাতাহাতির ঘটনায় জড়িয়ে এক নিকটাত্মীয়কে খুন করেছিলেন রতন। শুক্রবার ৫৫ বছর বয়সী রতনকেও মুক্তি দিলেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। জেলের ভিতরে তিন জনের আচরণ দেখার পরে, সংযমী জীবন যাপনের জন্যই তাঁদরকে মুক্ত করা হয়েছে বলে জানান জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ।
শহিদ বলেন, “এই তিন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির ব্যবহার, আচরণ-সহ বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে তাঁদের মুক্তির সুপারিশ করে জেল কর্তৃপক্ষ। তা অনুমোদন করে স্টেট সেন্টেন্স রিভিউ বোর্ড। আমরাও এক্ষেত্রে নিজেদের ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করেছি। খুব ভাল লাগছে এঁরা আবার সমাজের মূল স্রোতে ফিরে গেলেন।”