বেপয়োরা: হেলমেট নিয়ে প্রচারেও নেই সচেতনতা। নিজস্ব চিত্র।
কারও মাথায় হেলমেট নেই। কারওবা হেলমেট আছে। কিন্তু তা বাঁধা মোটরবাইকের পিছনে। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক-সহ সংলগ্ন অঞ্চলে এমন দৃশ্য চোখে পড়বে অহরহ।
পথ দুর্ঘটনায় রাশ টানতে সারা রাজ্য জুড়েই ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। তারই মাঝে ঘটছে দুর্ঘটনাও। ঘটছে প্রাণহানি। পুলিশের দাবি, অভিযান চলছে নিয়মিত। তবু হুঁশ ফিরছে কি!
সোমবার রাতে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে নন্দকুমার থানার নারাদাঁড়ি গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ সামন্তের (৪২)। সোমবার সকালেই হলদিয়া –মেচেদা রাজ্য সড়কে মোটরবাইক করে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, নারায়ণবাবু হেলমেট বেঁধে রেখেছিলেন মোটরবাইকের পিছনে। অভিযোগ, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি চালু হওয়ার পরই তৎপরতা বেড়েছিল পুলিশের। জেলার রাজ্য সড়কগুলি-সহ অন্য রাস্তাতেও নিয়মিত চলত অভিযান।
এমনকী, পেট্রোল পাম্পগুলিও হেলমেট ছাড়া তেল দিত না। কিন্তু অভিযোগ, আগের সেই তৎপরতা এখন আর নেই। তমলুক-পাঁশকুড়া রোডে প্রায়ই আচমকা অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু অন্য রাস্তাগুলিতে সেভাবে ধরপাকড় হয় না বলে অভিযোগ। একাধিক পেট্রোল পাম্পে হেলমেট ছাড়াই দিব্যি বিক্রি হচ্ছে তেল। প্রসঙ্গত, গত শনিবার পাঁশকুড়ায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল দুই মোটরবাইক আরোহীর। তাঁদের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না।
জেলার ডিএসপি ট্রাফিক স্বপনকুমার ঘোষ অভিযানে তৎপরতার অভাবের অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘জাতীয় সড়ক-সহ সব জায়গায় নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। প্রতিদিন আমরা প্রচুর মামলা করি।
তবে মানুষ সচেতন না হলে শুধু ধরপাকড় করে সমস্যার সমাধান হবে না।’’ স্বপনবাবুর দাবি, আগের চেয়ে হেলমেট পড়ার প্রবণতা এখন অনেকে বেড়েছে। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতিদিন জেলায় প্রায় ২০০-৩০০টি মামলা হয়। তার মধ্যে ২০ শতাংশই হেলমেট সংক্রান্ত।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নারায়ণবাবু মোটরবাইক করে কয়েক কিলোমিটার দূরে চাঁদখোয়া গ্রামে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার জন্য রূপনারায়ণ নদীবাঁধের পথ ধরে তমলুক শহরের গঞ্জনারায়ণপুরে হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়কের দিকে আসছিলেন তিনি। বেলা ১১ টা নাগাদ রাজ্য সড়কে ওঠার সময় মেচেদা থেকে হলদিয়াগামী একটি মোটরবাইকের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে। দুই মোটরবাইক আরোহীই সড়কের উপর ছিটকে পড়েন।
মাথায় আঘাত লাগে নারায়ণবাবুর। পুলিশ সূত্রের খবর, অন্য মোটরবাইক আরোহীর মাথায় হেলমেট ছিল। ফলে তাঁর খুব বেশি চোট লাগেনি। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা নারায়ণবাবুকে উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এস এস কে এম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেখানেই রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
নারায়ণবাবুর প্রতিবেশী সুকুমার ঘোড়ুই বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। নারায়ণবাবুর মাথায় হেলেমট ছিল না। মাথায় আঘাত লেগে কান দিয়ে রক্ত পড়ছিল। তমলুক জেলা হাসপাতাল থেকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy