Advertisement
০২ মে ২০২৪

তৃণমূলের মিছিলে হামলার নালিশ

তৃণমূলের বিজয় মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সিপিএমের ৬ কর্মী-সমর্থক। ধৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলা। পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল থানার আঁধারি-মৌভাণ্ডার গ্রামের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ০২:০১
Share: Save:

তৃণমূলের বিজয় মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সিপিএমের ৬ কর্মী-সমর্থক। ধৃতদের মধ্যে দু’জন মহিলা। পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল থানার আঁধারি-মৌভাণ্ডার গ্রামের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, গত বুধবার দুপুরে তৃণমূলের একটি বিজয় মিছিল আঁধারি-মৌভাণ্ডার গ্রাম দিয়ে যাওয়ার সময় গোলমাল হয়। বিজয় মিছিলের একেবারে পিছনে ছিলেন তৃণমূলের আঁধারি অঞ্চল সভাপতি তথা সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ ভাগবত মান্না। ছিলেন তাঁর ছেলে বিপ্লব মান্না-সহ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী। আঁধারি-মৌভাণ্ডার গ্রামের বাসিন্দা সিপিএম কর্মী রঞ্জিত ঘোড়ইয়ের বাড়ির সামনে দিয়ে বিজয় মিছিলটি যাওয়ার সময় তৃণমূলের লোকেরা কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। এবার নির্বাচনে স্থানীয় বুথে সিপিএমের পোলিং এজেন্ট ছিলেন রঞ্জিতবাবু। তাঁকে কটূক্তি করতেই সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা তেড়ে আসেন। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের বচসা ও হাতাহাতি শুরু হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সিপিএম কর্মী-সমর্থক মিছিলের উপর তির-ধনুক ও টাঙি নিয়ে চড়াও হন। তির ও টাঙির আঘাতে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভাগবতবাবু, তাঁর ছেলে-সহ তিনজন তৃণমূল কর্মী জখম হন। ঘটনায় এক সিপিএম কর্মীও জখম হন। আহতদের স্থানীয় ভাঙাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। টাঙির কোপে জখম তৃণমূল কর্মী বাসুদেব দোলুইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঘটনায় ১২ জন সিপিএম কর্মী-সমর্থকের নামে সাঁকরাইল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী ভূষণ বেরা। অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। দুই মহিলা-সহ ৬ জন সিপিএম কর্মী-সমর্থককে বুধবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়। বাকিরা পলাতক। ধৃতরা হলেন বিমল দণ্ডপাট ও তাঁর স্ত্রী ময়না দণ্ডপাট, হৃদয় সিংহ ও তাঁর ছেলে তরুণ সিংহ, গৌতম দণ্ডপাট ও কল্পনা দণ্ডপাট। ধৃত ৬ জনকে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম দ্বিতীয় এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। দুই মহিলাকে শর্তাধীন জামিনে মুক্তি দেন বিচারক। তদন্তের স্বার্থে বাকি চার ধৃতকে তিনদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী তপন চৌধুরী বলেন, “আমার মক্কেলদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশের কেস ডায়েরিতে অভিযোগের স্বপক্ষে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ না থাকায় দুই মহিলার জামিনের আবেদন আদালত মঞ্জুর করে।”

সিপিএমের সাঁকরাইল জোনাল কমিটির সম্পাদক বাদল রানা-র অভিযোগ, “বুধবার বিজয় মিছিলটি যাওয়ার সময় ভাগবতবাবুর নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকেরাই আমাদের কর্মী রঞ্জিত ঘোড়ইয়ের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-লুঠ করে। আমাদের সমর্থক গ্রামবাসীরা হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে গেলে গোলমাল হয়।’’ বাদলবাবুর আরও অভিযোগ, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে সাঁকরাইলের ব্লকসদর রোহিনী এলাকায় সিপিএমের সাঁকরাইল জোনাল কার্যালয়টি দখল করে নিয়েছে তৃণমূল। কুলটিকরি লোকাল কমিটির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তৃণমূলের সাঁকরাইল ব্লক সভাপতি সোমনাথ মহাপাত্র বলেন, “সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনীর লোকেরা আমাদের বিজয় মিছিলে পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে। আঁধারি অঞ্চল সভাপতি ভাগবত মান্না-সহ তিন জন আহত হন। কর্মীদের সংযত থাকতে বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC CPM Rally Arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE