ক্ষয় রোগ বাড়ছে জঙ্গলমহলের জেলায়। পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা এখন ৬,২৮৭। এর মধ্যে প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগী ৯৪জন। এই হিসেবে উদ্বিগ্ন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। বিশেষ করে প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ভাবনার বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, প্রতিরোধী যক্ষ্মায় বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করা যায় না। তা হলে এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে আরও অনেকের মধ্যে। আরও উদ্বেগের তথ্য হল, যক্ষ্মা রোগীদের একাংশ মাঝপথেই চিকিত্সা বন্ধ করে দিচ্ছেন।
শুক্রবার ছিল ‘বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস’। সেই মতো মেদিনীপুরে নানা কর্মসূচি হয়। সকালে সচেতনতামূলক পদযাত্রায় সামিল হন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান প্রমুখ। পরে এক সচেতনতা শিবিরও হয়। এই কর্মসূচিতে যক্ষ্মা ঘিরে উদ্বেগ ধরা পড়ে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, “কেউ কেউ মাঝপথে চিকিত্সা বন্ধ করে দিচ্ছেন। চিহ্নিত করে আমরা তাঁদের ফের চিকিত্সার আওতায় আনার ব্যবস্থা করছি। যক্ষ্মার ক্ষেত্রে চিকিত্সা সম্পূর্ণ করলে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাই বেশি।’’ জেলার যক্ষ্মা আধিকারিক শক্তিপদ মুর্মুরও স্বীকারোক্তি, “গত কয়েক মাসেও নতুন নতুন রোগীর খোঁজ মিলেছে। পরামর্শ না মেনে একাংশ রোগী মাঝপথে চিকিত্সা ছেড়ে দিচ্ছেন। যক্ষ্মা বাড়ার এটাও একটা কারণ।”
সাধারণত হাঁচি, কাশি, কফের মাধ্যমে যক্ষ্মা ছড়ায়। ৬-৯ মাসের চিকিত্সায় সাধারণ যক্ষ্মা সেরে যায়। কিন্তু প্রতিরোধী যক্ষ্মা সারতে বেশ সময় লাগে। কম করে ২৪- ২৭ মাস। ‘মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট’ (এমডিআর) যক্ষ্মাকেই প্রতিরোধী যক্ষ্মা বলা হয়। প্রচলিত কোনও ওষুধে এই যক্ষ্মা সারানো যায় না। জানা গিয়েছে, নতুন যক্ষ্মা রোগীদের ২-৩ শতাংশ এমডিআর যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। আর যত যক্ষ্মা রোগী দ্বিতীয় বার যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় তাদের ১৫ শতাংশের দেহে এমডিআর যক্ষ্মা পাওয়া যায়।
এখন মেদিনীপুর মেডিক্যালেই প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্ণয় শুরু হয়েছে। মাস চারেক আগেও জেলায় প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪৫। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২৯৪। এর মধ্যে ২২ জন আবার চিকিত্সার আওতা থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। এই সব সমস্যা কাটানোই এখন স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ‘চ্যালেঞ্জ’। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধানের আশ্বাস, “যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কমাতে চেষ্টা চলছে। নিয়মিত চিকিত্সার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। সচেতনতাও জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy