E-Paper

পিষে দিল লরি, হাত হারাল ছাত্রী

তমলুক হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ছাত্রী হাসপাতালে পৌঁছয়। তার কাঁধ থেকে ডান হাতের পুরো অংশ আলাদা হয়ে গিয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

‘গ্রিন করিডর’ করেও হল না শেষ রক্ষা। স্কুলে যাওয়ার পথে লরির ধাক্কায় আহত এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী হারাল তার ডান হাত। সুতাহাটা থানা এলাকার কুঁকড়াহাটি জেটি ঘাটের অদূরের ঘটনা।

আহত কিশোরী মৌসুমী মিস্ত্রি কুঁকড়াহাটি হাই স্কুলের ছাত্রী। বাড়ি রায়নগর গ্রামে। ওই ছাত্রী শনিবার সকালে সাইকেলে স্কুল যাচ্ছিল। কুঁকড়াহাটি থেকে হোড়খালিগামী রাস্তায় কুঁকড়াহাটি জেটি ঘাটের কাছে একটি কয়লা বোঝাই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার সাইকেলে ধাক্কা মারে। ছাত্রী রাস্তায় পড়ে গেলে লরির চাকা তার ডান হাতের উপর দিয়ে চলে যায়।

কিশোরীকে গুরুতর আহত অবস্থায় হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে সেখানে চিকিৎসার পরে মৌসুমীকে দ্রুত তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের সুপারিশ করা হয়। হলদিয়ার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জেলা প্রশাসনের কাছে ঘটনার কথা জানায়। জেলাশাসকের উদ্যোগে মৌসুমীকে তমলুকে আনতে ‘গ্রিন করিডর’ করে পুলিশ। যাতে দ্রুত তাকে তমলুকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা যায়।

তমলুক হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই ছাত্রী হাসপাতালে পৌঁছয়। তার কাঁধ থেকে ডান হাতের পুরো অংশ আলাদা হয়ে গিয়েছিল। হাসপাতালের অস্থি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভজন সরকার, শিবশঙ্কর দে এবং অরিজিৎ দাস মিলে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন। শিবশঙ্কর দে বলেন, ‘‘ছাত্রীর ডান হাত কাঁধের নীচ থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পরে ওকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় রক্ত দিতে হয়েছিল। তবে ছাত্রীর শারীরিক অবস্থায় এখন অনেকটাই স্থিতিশীল।’’ হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ভাস্কর বৈষ্ণব বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রিন করিডোর করে ওই ছাত্রীকে দ্রুত এখানে আনা হয়েছিল। ওর অস্ত্রোপচার হয়েছে।’’

হলদিয়া থেকে তমলুকে যেতে সাধারণত ৫০ থেকে ৫৫ মিনিট সময় লাগে। তবে ‘গ্রিন করিডর’ করে যাওয়ায় সময় বেশ খানিকটা কম লেগেছে এ দিন। হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনোরঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘আহত ছাত্রীকে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে তাম্রলিপ্ত মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে আনুমানিক ৪০ মিনিট সময় লেগেছে।’’ মৌসুমীর পিসি কৃষ্ণা বাড়ই বলেন, ‘‘মৌসুমীর বাবা-মা কাজের সূত্রে কেরলে থাকেন। মৌসুমী বাড়িতে ভাই ও দাদু-ঠাকুমার সঙ্গে থাকে। জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় দ্রুত তমলুক হাসপাতালে আনা হয় ওকে।’’

মাধ্যমিক পরীক্ষা চালাকালীন একটি নির্দিষ্ট সময়ে জেলার বিভিন্ন রাস্তায় ভারী গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ দিনের দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িতে কয়লা বোঝাই ছিল। স্কুলের সময়ে ভারী গাড়ি চললেও পুলিশের নজরদারি আদৌ কি ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এ ব্যাপারে হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনোরঞ্জন ঘোষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tamluk

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy