Advertisement
E-Paper

ঘুমিয়ে কন্যা, পাশে মৃত মা, বাবার দেহ সিঁড়িতে! খড়্গপুরে কোয়ার্টারে ঢুকে দেখলেন যুবকের প্রথম স্ত্রী

যুবকের দুটো বিয়ে। সম্প্রতি প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ছিল। সোমবার সকালে প্রথম পক্ষের স্ত্রী জানান, গত রাতে তাঁর কাছেই খাওয়া-দাওয়া করে রেলের কোয়ার্টারে দ্বিতীয় স্ত্রী এবং সন্তানের কাছে যান যুবক।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩০
Husband-Wife Death in Kharagpur

দম্পতির তিন বছরের কন্যাসন্তান ঘুমোচ্ছিল ঘরে। তার পাশে পড়েছিল মায়ের দেহ, বাইরে বাবার। —নিজস্ব চিত্র।

রেলের কোয়ার্টারে যুগলের দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর শহরে। জানা যাচ্ছে, কোয়ার্টারের লোহার সিঁড়ি থেকে ঝুলছিল যুবকের দেহ। আর একটি ঘরে বিছানায় পড়েছিল তাঁর স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ। তাঁর পাশে ঘুমোচ্ছিল বছর তিনের কন্যাসন্তান। এ নিয়ে সোমবার সকাল থেকে শোরগোল খড়্গপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জয়হিন্দনগর এলাকায়। ইতিমধ্যে জোড়া দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম নাম দীপা মাহাতো (২৬) এবং বিক্রম পুত্তা (৩৭)।প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক অশান্তির কারণে স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন পেশায় গাড়িচালক বিক্রম। রবিবার রাতে পুরো ঘটনাটি ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর পনেরো আগে শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নিমপুরা এলাকার বাসিন্দা পি সোনির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বিক্রমের। তাঁদের ১৪ বছরের একটি ছেলে এবং ১২ বছরের যমজ মেয়ে রয়েছে। তবে বছর পাঁচেক আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন বিক্রম। পাত্রী দীপার বাড়ি খড়্গপুর শহরেই। ওই দম্পতির তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।

প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বেশ কিছু দিন ধরে দম্পতির মধ্যে অশান্তি চলছিল। প্রায়শই তাঁদের ঝগড়া করতে শুনেছেন। অশান্তির কারণ, সম্প্রতি প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ছিল বিক্রমের। আবার দীপার পরকীয়া ছিল বলেও দাবি করেছেন কেউ কেউ। সোমবার সকালে বিক্রমের প্রথম স্ত্রী সোনি দাবি করেন, রাতে তাঁর কাছেই খাওয়া-দাওয়া করে জয়হিন্দনগরের বাড়িতে যান স্বামী। রবিবার রাতে আর নিমপুরার বাড়িতে ফেরেননি। তাই খোঁজ নিতে সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ জয়হিন্দনগরে পৌঁছোন তিনি। কারও সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজায় ঠেলা দেন। দরজা খুলে যায়। ভেতরে ঢুকেই হাড়হিম করা দৃশ্য দেখেন তিনি।

সোনি জানান, দরজা খোলার পর প্রথমেই দেখেন, লোহার সিঁড়ি থেকে বিক্রমের দেহ ঝুলছে। চমকে গিয়ে পায়ে পায়ে ঘরের ভিতরে ঢোকেন। সেখানে বিছানায় দীপার গলাকাটা দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পাশে পড়ে ছিল একটি লোহার রড। তখনও অঘোরে ঘুমোচ্ছিল দীপা ও বিক্রমের তিন বছরের কন্যাসন্তান। এলাকার লোকজনকে তিনি-ই ডাকেন বলে জানিয়েছেন মহিলা। ঘটনাক্রমে খড়্গপুর টাউন থানায় খবর দেওয়া হয়। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মুরলীধর রাও ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, ‘‘আমি ফোনে খবর পেয়েই ছুটে এসেছিলাম। পুলিশকেও জানাই।’’ কাউন্সিলরের সংযোজন, ‘‘প্রায় দু’বছর ধরে ওঁরা এখানে ভাড়া থাকতেন। কী ভাবে মৃত্যু হল জানার জন্য সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’

পুলিশ জানিয়েছে, দুটি দেহ ময়নাতদন্তের জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। তবে প্রাথমিক অনুমান, স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যা করেছেন যুবক। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব হবে।’’

Kharagpur Crime Husband Wife Death Case
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy