পুণ্য স্নানের জন্য সকলে প্রয়াগরাজের কুম্ভ মেলায় যাচ্ছেন। কিন্তু পুণ্য অর্জনে গিয়ে একজন মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্তকে কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, তা নিজে চাক্ষুষ করেছি। আমি নিজে স্নান করতে হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলাম। তাই এখন কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে বা নয়া দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় অবাক হচ্ছি না।
গত ২৭ জানুয়ারি আমার এক কলকাতার বন্ধুর সঙ্গে প্রয়াগরাজে গিয়েছিলাম। সঙ্গে ছিল বন্ধুর বাড়ির লোকজন। এক মঙ্গলবার প্রয়াগরাজে দু’নম্বর গেট দিয়ে ঢুকে স্নান করতে যাই। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল হাজার হাজার লোক। এই বৃদ্ধ বয়সে ভিড় ঠেলে এগনোর শক্তি হয়নি। কোনও রকমে মাটিতে বসে পড়ি। বেশ কিছুক্ষণ পর ভিড় কমতে দেখি সঙ্গীরা কেউ নেই। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ারও কোনও পুলিশ নেই। কিছুক্ষণ পরে আবার হুড়োহুড়ি হয়। আবার ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাই মাটিতে। দেখি, অনেকেই দৌড়চ্ছে। কারও পরণে জামা আছে তো প্যান্ট নেই। আর শুধু হিন্দিতে কী সব কথা বলে যাচ্ছিল।
আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম। বাড়ির লোকও আমাকে নিখোঁজ দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল। ওই সময় মনে হচ্ছিল আর ছেলে, বৌমা, নাতি, নাতনির সঙ্গে দেখা হবে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটেছে এরকমই। ঈশ্বরকে ডেকেছি। অনবরত কেঁদে চলেছি। তখন দেখে একজন বাংলায় জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী নাম? কোথায় বাড়ি’? পরিচয় দিতে উনি বললেন, ওঁর বাড়ি বর্ধমানে। এরপর ওই সহৃদয় ব্যক্তি আমাকে কোনও রকমে হাত ধরে নিয়ে গেলেন একটা শিবিরে। অনুসন্ধান অফিস থেকে মাইকে বারবার আমার নাম ঘোষণা করা হয়। তবে আমাদের দলের কেউ আর এল না।
শিবিরে যা দিয়েছিল, তা পেট ভরে খেয়েছি। বর্ধমানের ওই বাসিন্দা আমাকে কাঁথির বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। ৩০ জানুয়ারি যখন কাঁথি ফিরি, তখন ছেলে আমাকে খুঁজতে কুম্ভে চলে গিয়েছে। যে বিশৃঙ্খলা আমি দেখেছি, তাতে ভাবতে পারিনি, প্রাণে বাঁচব। কিন্তু এখন যখন খবরে নয়া দিল্লির ঘটনা শুনছি, তখন কষ্ট হচ্ছে। বুঝতে পারছি ওই পূণ্যার্থীরা কতটা কষ্ট পেয়েছিলেন। আর তাঁদের পরিবার উপর দিয়েই বা কী ধরনের ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
(অণুলিখন: কেশব মান্না)
সম্প্রীতির শবেবরাত
পাঁশকুড়া: তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রের উদ্যোগে পালিত হল শবেবরাত। পাঁশকুড়ায় বিধায়কের বাড়িতে এই উপলক্ষে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষজন উপস্থিত হন। কর্মসূচিতে বিভিন্ন রকমের খাবার বানিয়ে সবার মধ্যে বিতরণ করা হয়। সৌমেন মহাপাত্র ছাড়াও কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কাউন্সিলর সুমনা মহাপাত্র প্রমুখ।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)