জেলার সদর শহর। জনবসতি প্রায় দু’লক্ষ। অথচ সেই শহর মেদিনীপুরে কতজনের আধার কার্ড আছে, ক’জনের তা পাওয়া বাকি, সেই পরিসংখ্যানটুকুই নেই পুরসভা ও প্রশাসনের কাছে।
আধার এখন অত্যন্ত জরুরি একটি নথি। সরকারি সাহায্য-অনুদান, গ্যাসের ভর্তুকি, সরকারি ভাতা— এ সবের জন্য আধার জরুরি। আধার না থাকলে ব্যাঙ্কে ‘জিরো ব্যালেন্স’ অ্যাকাউন্টও খোলা যাচ্ছে না। বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার উপভোক্তাদের একটা বড় অংশেরই আধার নেই। স্কলারশিপ, ফেলোশিপ, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় অনুদানের ক্ষেত্রেও আধার বাধ্যতামূলক করতে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ফলে, এই কার্ড না থাকায় মেদিনীপুরের বহু মানুষ দুর্ভোগে পড়ছেন। হন্যে হয়ে কেউ জেলাশাসকের অফিসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তো কেউ পুরসভায় কড়া নাড়ছেন। কিন্তু কারও কাছেই সদুত্তর মিলছে না। সমস্যা মেটাতে ফের আধার কার্ড তৈরি শুরু হয়েছে মেদিনীপুর পুর এলাকায়। গত ৫ অগস্ট ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে এই কাজ শুরু হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৯টি ওয়ার্ডে কার্ড তৈরির দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। মেদিনীপুরের উপ-পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “পরবর্তী সময় যে সব ওয়ার্ডে আধার কার্ডের কাজ হবে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।”
শহরে আধার কার্ড তৈরির কাজ আগেও হয়েছে। কিন্তু অনেকেই সেই সময় কার্ড করাতে পারেননি। আবার অনেকে কার্ড পাননি। ফলে নতুন করে শিবির করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুজিত দত্তের কথায়, “আধার কার্ড নিয়ে ভীষণ সমস্যায় রয়েছি। এই নথি না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে।’’
জানা গিয়েছে, আধার কার্ডের জন্য পুরসভাতেই আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার। এর বাইরেও মেদিনীপুরের বহু মানুষ রয়েছে পুরসভায়। এ বার তিনটি যন্ত্রে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি যন্ত্রে গড়ে ২০০ জনের বেশি ছবি তোলা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, এক-একটি ওয়ার্ডে জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৭-১০ দিন করে সময় দেওয়া হচ্ছে।
কিন্তু নতুন করে আধার কার্ড যে হচ্ছে শহরবাসীকে তা জানাতে উপযুক্ত প্রচারের বন্দোবস্ত নেই। কিন্তু আগে থেকে প্রচার না করা হলে মানুষ জানবেন কী করে? অনেকেই তো কাজের সূত্রে বাইরে থাকতে পারেন। তাহলে তো তাঁরা আবার বঞ্চিত হবেন! তাই শহরবাসীর প্রশ্ন কেন মাইকে, পোস্টারে আধার কার্ড তৈরির দিনক্ষণের কথা প্রচার
করা হচ্ছে না?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু যন্ত্র মাত্র তিনটি তাই বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় প্রচারে তেমন জোর দেওয়া হচ্ছে না। পুরসভা জানিয়েছে, প্রচারের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরই করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy