Advertisement
E-Paper

গড়বেতা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে গেরুয়া তিলক এবিভিপির

শনিবার বিকেলে স্যরের অনুমতি নিয়েই তাঁকে মিষ্টি খাইয়ে দেন ওই ছাত্রেরা। সেখানেই শেষ নয়। অধ্যক্ষের কপালে তাঁরা এঁকে দেন গেরুয়া তিলকও।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ০১:১১
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে এবিভিপির কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে এবিভিপির কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

প্রথমে তেমনটা কিছুই মনে হয়নি গড়বেতা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের। ছাত্র ও প্রাক্তন ছাত্র মিলিয়ে জনা দশজন ঘরে ঢোকার অনুমতি চাইছে।

অনুমতি দেওয়ার পরই অবশ্য কিছুটা অন্যরকম ঠেকছিল ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুশীল বেরার। সকলেরই মুখে গেরুয়া আবির। কারও কারও হাতে আবার মিষ্টির প্যাকেট। শনিবার বিকেলে স্যরের অনুমতি নিয়েই তাঁকে মিষ্টি খাইয়ে দেন ওই ছাত্রেরা। সেখানেই শেষ নয়। অধ্যক্ষের কপালে তাঁরা এঁকে দেন গেরুয়া তিলকও।

ফ্ল্যাশব্যাক ২০১২-এর ৫ জানুয়ারি। রাজ্যে পালাবদলের এক বছরও অতিক্রান্ত হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়া ঘিরে সে দিন রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে তুমুল গোলমাল। অভিযোগ, স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারকে হেনস্থা করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকদের একাংশ। অভিযোগ, সেই দলে ছিল বহিরাগতেরাও।

গুরুত্বের নিরিখে ফারাক থাকলেও শিক্ষাবিদদের একাংশের বক্তব্য, ক্ষমতায় আসার এক বছরের মধ্যে শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের হাতে হেনস্থা হতে হয়েছিল অধ্যক্ষকে। আর এখানে তো শুধুমাত্র লোকসভায় গড়বেতায় লিড পাওয়ার পরই অধ্যক্ষের কপালে গেরুয়া তিলক লাগিয়ে দেওয়া হল।

যাঁরা এই কাণ্ড করেছেন, তাঁরা কি এবিভিপি সদস্য? কলেজ সূত্রের খবর, ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় এই মুহূর্তে কোনও কলেজেই ছাত্র ইউনিয়ন নেই। তবে নানা দলের ছাত্র সংগঠনের ইউনিট রয়েছে। গড়বেতা কলেজে এতদিন শক্তিশালী ছিল টিএমসিপি। লোকসভার পরে ভাঙন ধরেছে সংগঠনে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছে এবিভিপি। যে ক’জন তিলক কেটেছিলেন তাঁরাও টিএমসিপির সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন বলে কলেজ সূত্রের খবর।

ঠিক কী হয়েছিল শনিবার? কলেজ সূত্রের খবর, গত রবিবার কলেজে জয়েন্ট এন্ট্রাসের পরীক্ষা ছিল। তাই আগের দিন প্রস্তুতি চলছিল কলেজে। ওই জনা দশেক ছাত্র কলেজে এসে টিএমসিপির পতাকা খুলে ফেলেন। লাগিয়ে দেন এবিভিপির পতাকা। শুরু হয়ে যায় উৎসব। গেরুয়া আবির খেলা, মিষ্টিমুখ। প্রথমে কর্মচারীদের আবির মাখিয়ে মিষ্টিমুখ করান ওই ছাত্রেরা। তারপরই সোজা অধ্যক্ষের ঘরে।

কেন তিলক কাটতে দিলেন? ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুশীল বলেন, ‘‘আচমকা ঘটনাটি ঘটে। কিছু বোঝার আগেই ওরা কপালে তিলক কেটে দেয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ওই দিন যারা কলেজে এসেছিল, তাদের অনেকেই কলেজের ছাত্র। আমি বুঝতে পারিনি, ওরা এ রকমটা করবে।’’

এবিভিপিকে অবশ্য বিঁধতে ছাড়ছে না টিএমসিপি, এসএফআই। টিএমসিপির জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গড়বেতা কলেজে বহিরাগত কিছু ছেলে ঢুকেছিল। জোর করে নিজেদের পতাকা টাঙিয়েছে এবিভিপির ছেলেরা। আমাদের পতাকা ছিঁড়ে দিয়েছে।’’ এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদির কথায়, ‘‘ক্যাম্পাস গৈরিকীকরণের চেষ্টা চলছে।’’ এবিভিপির জেলা সভাপতি স্বরূপ মাইতি অবশ্য বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীদের উপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার করেছে টিএমসিপি। এই নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী শক্তির উত্থান হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা আরও বেশি করে এগিয়ে আসছেন। গড়বেতার ওই ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সংগঠন উপযুক্ত পদক্ষেপই করবে।’’

ABVP BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy