Advertisement
E-Paper

মেডিক্যাল থেকেই মাধ্যমিকে

পাখির চোখ মাধ্যমিক। অ্যাসিড হামলার কথা ভুলে ভাল ভাবে পরীক্ষা দেওয়াই এখন চ্যালেঞ্জ সবংয়ের বছর ষোলোর কিশোরীর। মঙ্গলবার সকালে সবং গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ২৩:৩৬

পাখির চোখ মাধ্যমিক। অ্যাসিড হামলার কথা ভুলে ভাল ভাবে পরীক্ষা দেওয়াই এখন চ্যালেঞ্জ সবংয়ের বছর ষোলোর কিশোরীর। মঙ্গলবার সকালে সবং গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বিশেষজ্ঞ শল্য চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসার জন্যই ওই কিশোরীকে স্থানান্তরিত করা হয়। আজ, বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যালেই সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে বলে জানা গিয়েছে।

সবং গ্রামীণ হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুভাষ কাণ্ডার বলেন, “আমাদের হাসপাতালে শল্য চিকিৎসক নেই। ওই কিশোরীর চিকিৎসার জন্য শল্য চিকিৎসকের প্রয়োজন। প্রয়োজন হতে পারে ‘প্ল্যাস্টিক সার্জারি’রও। উন্নত চিকিৎসার জন্যই তাকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা দিতে তার কোনও অসুবিধা হবে না।”

গত রবিবার গভীর রাতে সবংয়ে অ্যাসিড হামলার শিকার হয় ওই কিশোরী। ওই দিন রাতে বাড়ির বাইরের ঘরে মা-বাবা-ভাইবোনের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিল সে। হঠাৎ মুখে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হলে ওই কিশোরী চিৎকার করে ওঠে। ঘুম থেকে উঠে সে দেখে তার মুখে কেউ ঝাঁঝালো তরল ঢেলে দিয়েছে। পরিজনেরা তাকে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনায় কিশোরীর জেঠুর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিবেশী দিগ্বিজয় সিংহকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে এখন পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

মঙ্গলবার ওই কিশোরীর মা বলছিলেন, ‘‘ওই যুবক আমার মেয়ের যা ক্ষতি করেছে তা কিছুতেই ভুলতে পারছি না। কী ভাবে এই মানসিক পরিস্থিতিতে ও পরীক্ষা দেবে জানিনা।” অ্যাসিডে মুখের কিছুটা অংশ ঝলসে গেলেও অবশ্য লড়াই ছাড়তে নারাজ কিশোরী। হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল সে। মঙ্গলবার মেদিনীপুর মেডিক্যালের বিছানায় শুয়ে কিশোরী বলে, “আগে থেকেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। তবে দু’দিন আগের এই ঘটনায় সব কেমন এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। তবে আমি হার মানব না। যে ভাবে হোক পরীক্ষা দেব। যা পারি লিখব।”

কিশোরীর পাশে দাঁড়িয়েছে তার স্কুলও। হাসপাতালে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে মঙ্গলবার ওই কিশোরীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মঙ্গলবারই মেদিনীপুরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আঞ্চলিক কার্যালয়ে যান। প্রধান শিক্ষক বলেন, “যে স্কুলে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমিকের কেন্দ্র পড়েছে, সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে জমা দেব। সময় কম হলেও ওই কিশোরীর হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দেওয়ার সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে পারব বলে আশা করছি।’’

তিনি আরও বলছেন, ‘‘এ ধরনের নিকৃষ্ট ঘটনা যারা ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। হাসপাতালে পরীক্ষা দিয়েই আমার স্কুলের ছাত্রী এই ঘটনার উপযুক্ত জবাব দেবে।”

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পশ্চিম মেদিনীপুরের আহ্বায়ক নির্মলেন্দু দে বলেন, ‘‘হাসপাতালে ওই কিশোরীর পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে তার স্কুলের পক্ষ থেকে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই মতো সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল থেকেই ওই কিশোরী মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে।’’

Madhyamik examination Acid attacked student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy