Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
সংক্রমণ কমছে পশ্চিমে, বেশিরভাগ রোগী বাড়িতে
Coronavirus. Covid-19

বন্ধ হচ্ছে করোনা হাসপাতাল

জেলায় করোনা সংক্রমিতদের ৮-১০ শতাংশই এখন কোভিড হাসপাতালে কিংবা সেফ হোমে ভর্তি থাকছেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৮:২৭
Share: Save:

এক সময়ে চালুর তোড়জোড় ছিল। আর এখন প্রস্তুতি ঝাঁপ বন্ধের।

উৎসবের মরসুমেও এখন করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী। কমছে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যাও। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে মেদিনীপুরের একটি কোভিড হাসপাতাল বন্ধ হতে চলেছে। সব ঠিকঠাক থাকলে আজ, শনিবার থেকে বন্ধ হবে ‘আয়ুষ স্যাটেলাইট কোভিড হাসপাতাল’। শুক্রবার থেকেই তাঁতিগেড়িয়ার এই হাসপাতালটি রোগীশূন্য হয়ে পড়েছে। মেদিনীপুরের আবাসের অদূরে ‘আয়ুষ কোভিড হাসপাতাল’ রয়েছে। কার্যত এই হাসপাতালেরই দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হিসেবে কাজ করত বন্ধ হতে চলা করোনা হাসপাতালটি।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল মানছেন, ‘‘এখন করোনা রোগীর সংখ্যা কমেছে। তাই তাঁতিগেড়িয়ার হাসপাতালটি আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, ‘‘আপাতত বন্ধ থাকছে। প্রয়োজনে পরে ফের চালু হতে পারে।’’

সরকারি উদ্যোগে তাঁতিগেড়িয়ায় একটি ভবঘুরে আবাস গড়ে ওঠে। নবনির্মিত ভবনটি অব্যবহৃত পড়েছিল। কয়েক মাস আগে এখানেই ১০০ শয্যার কোভিড হাসপাতালের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। তখন জেলায় করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এক সময়ে দিনে এখানে ৬০-৭০ জন করে রোগী ভর্তি থেকেছেন। জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি মেদিনীপুরে করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের এক বৈঠক হয়েছে। ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমলও। সার্বিক করোনা পরিস্থিতির পর্যালোচনা হয়। তখনই দেখা যায়, ইদানীং তাঁতিগেড়িয়ার ওই হাসপাতালে কম সংখ্যক রোগীই ভর্তি থাকছেন। সবদিক খতিয়ে দেখে এরপরই হাসপাতালটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয়, ওই হাসপাতালের চিকিৎসক- নার্সরা যে যাঁর পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যাবেন।

এক সময় জেলায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা থাকত দেড়শোর বেশি। এখন সংখ্যাটা পঞ্চাশের আশেপাশে থাকছে। একাধিক মহলের দাবি, পরীক্ষার সংখ্যা কমেছে। তাই সংক্রমিতের সংখ্যা কমেছে। এক সময়ে দিনে গড়ে ১,০০০-১,২০০ পরীক্ষা হচ্ছিল। কোনও কোনও দিন গড়ে ১,৪০০- ১৫০০ পরীক্ষাও হয়েছে। এখন সেখানে পরীক্ষার সংখ্যা নেমে এসেছে দিনে গড়ে ৮০০- ৮৫০ তে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, জেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পরীক্ষা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, জেলায় করোনা সংক্রমণের হার প্রায় ৮ শতাংশ। অর্থাৎ, এখনও প্রতি ১০০ জনে ৮ জন সংক্রমিত থাকছেন।

জেলায় করোনা সংক্রমিতদের ৮-১০ শতাংশই এখন কোভিড হাসপাতালে কিংবা সেফ হোমে ভর্তি থাকছেন। বাকি ৯০-৯২ শতাংশ থাকছেন হোম আইশোলেশনে। বৃহস্পতিবার যেমন জেলার কোভিড হাসপাতাল এবং সেফ হোমগুলিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন মোটে ৪৮ জন করোনা সংক্রমিত। এর মধ্যে আয়ুষ কোভিড হাসপাতালে ১৮ জন, শালবনির কোভিড হাসপাতালে ২২ জন, ঘাটালের কোভিড হাসপাতালে ৫ জন, খড়্গপুরের সেফ হোমে ৩ জন। মেদিনীপুরের আয়ুষ স্যাটেলাইট কোভিড হাসপাতালে কোনও রোগীই ছিলেন না। ডেবরার সেফ হোমও ছিল ফাঁরা। অথচ, ওই দিন জেলায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৯৫। অর্থাৎ, প্রায় ৮ শতাংশ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। প্রায় ৯২ শতাংশই ছিলেন ঘরবন্দি। জেলাশাসকের স্বীকারোক্তি, ‘‘কোভিড সংক্রমিতদের অনেকেই এখন হোম আইসোলেশনে থাকতে চাইছেন।’’

কিন্তু একটি হাসপাতাল বন্ধ হলে করোনা- চিকিৎসায় শয্যার অভাব হবে না? জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ৬০০-রও বেশি শয্যার বন্দোবস্ত রয়েছে জেলায়। ফলে, সমস্যা হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Covid-19 Covid Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE