Advertisement
E-Paper

মশারিতে না বাড়াচ্ছে ভয়

ওই এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই মশারি ব্যবহার করেন না। আর তা মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে। পরে ওই এলাকায় মশারি বিলি করা হয়। জ্বরে আক্রান্ত রোগী যাতে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করেন, স্থানীয়দের সেই পরামর্শও দেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫০
মেদিনীপুর গ্রামীণে দেওয়া হচ্ছে মশারি। নিজস্ব চিত্র

মেদিনীপুর গ্রামীণে দেওয়া হচ্ছে মশারি। নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গি ঠেকাতে লাগাতার প্রচার চলছে। মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে বলা হচ্ছে মশারি টাঙানোর কথা। তাও মশারি ব্যবহারে অনীহা কাটানো যাচ্ছে না কিছুতেই।

দিন কয়েক আগে জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল মেদিনীপুর গ্রামীণের একাধিক এলাকায়। কয়েকজনের রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণুও ধরা পড়ে। নড়েচ বসেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ওই এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই মশারি ব্যবহার করেন না। আর তা মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে। পরে ওই এলাকায় মশারি বিলি করা হয়। জ্বরে আক্রান্ত রোগী যাতে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করেন, স্থানীয়দের সেই পরামর্শও দেন স্বাস্থ্যকর্তারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা মানছেন, “গ্রামাঞ্চলে অনেকে মশারি ব্যবহার করেন না। বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে এটা দেখা গিয়েছে। অথচ, মশারি ব্যবহার করা খুব জরুরি।’’

পরিস্থিতি দেখে ব্লকে ব্লকে মশারি বিলি শুরু করেছে প্রশাসন। জেলায় সব মিলিয়ে ২৬,৬০০টি মশারি বিলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে এই সংখ্যক মশারি জেলায় চলেও এসেছে। জেলা থেকে তা বিভিন্ন ব্লকে পাঠানো হচ্ছে। শুক্রবারই যেমন মেদিনীপুর গ্রামীণের চাঁদড়া, ধেড়ুয়ায় মশারি বিলি হয়েছে। ছিলেন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা পতঙ্গবাহী রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান। তিনি বলেন, “মশারি বিলির কাজ শুরু হয়েছে। মানুষ সচেতন না হলে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করা কঠিন। তাই যেখানে মশারি বিলি করা হচ্ছে, সেখানে সচেতনতা কর্মসূচিও হচ্ছে।’’ যে মশারি বিলি করা হচ্ছে তা অবশ্য সাধারণ মশারি নয়। এই মশারির জালে মশা-প্রতিরোধী ওষুধ স্প্রে করা রয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত ৪৭৮ জন মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। অসময়ের বৃষ্টি পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে। ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে থাকায় সব পঞ্চায়েত এবং পুরসভাকে রাস্তায় নেমে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জমা জলা এবং আবর্জনা সাফাইয়ের ব্যাপারে আরও তত্পর হওয়ার কথা জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হচ্ছে ডেঙ্গি রুখতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এলাকায় নিয়মিত মশা মারার তেল দেওয়া থেকে শুরু করে অনেক কিছুই করা হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি মানতে নারাজ বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, মশা মারার জন্য অনেক কিছুই করার কথা শুনেছি। কিন্তু এলাকায় তা করা হচ্ছে না। মশা নিধনে এখনও তত্পর নয় প্রশাসন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবুর অবশ্য দাবি, “বিভিন্ন এলাকায় মশা মারার তেল ছড়ানো হয়েছে। কর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কাজ করছেন।’’

তবে জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, কিছু এলাকায় নিকাশির হাল খারাপ থাকায় জল জমছে। নর্দমার জমা জলে মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে। সেই সঙ্গে মশারি টাঙানোয় অনীহাও ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়য়, “প্রত্যন্ত এলাকাতেও মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা চলছে। মশারি টাঙিয়ে শোয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’’

Dengue Malaria Mosquitoes fever Water pollution মেদিনীপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy