E-Paper

দলনেত্রীর ধমক! মনোনয়ন ফেরাল উত্তম-শিবির

কাঁথির ওই সমবায় ব্যাঙ্কের ১৫ জন পর্ষদ সদস্য নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে ১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:২৭
নেই প্রতিদ্বন্দ্বী। জয়ী অখিল শিবিরের প্রার্থীরা।

নেই প্রতিদ্বন্দ্বী। জয়ী অখিল শিবিরের প্রার্থীরা।

দলনেত্রীর ‘ধমকে’ই মিটল কোন্দল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন পর্ষদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন ১১ জন তৃণমূল নেতা-কর্মী। যাঁরা সকলেই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এই মনোনয়ন প্রত্যাহারের ফলে কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ‘শুভেন্দু তালুকে’ পূর্ব ভারতের অন্যতম বৃহৎ সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটি তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। তবে, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পদাধিকারীদের সমন্বয় নিয়ে একটি বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল।

কাঁথির ওই সমবায় ব্যাঙ্কের ১৫ জন পর্ষদ সদস্য নির্বাচনে তৃণমূলের তরফে ১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর পরে অতিরিক্ত ১১ জন প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় তৃণমূলের দুই শিবিরের মধ্যে ভোটাভুটি হওয়ার সম্ভবনা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে বুধবার তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী জেলার তৃণমূল নেতৃত্বদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই সময়েই খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা উত্তম-শিবিরের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়ে জানান, যে প্রার্থী তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাঁরাই তাঁর প্রার্থী।

এর পরে এ দিন সাতসকাল থেকে ব্যাঙ্কের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে একে একে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন উত্তম-শিবিরের প্রার্থীরা। ব্যাঙ্কের সম্পাদক অ্যাপোলো আলি বলেন, ‘‘২৬ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। এদিন ১১ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।’’ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ১১ জন পরিচালন কমিটির সদস্যকে শংসাপত্র দেওয়া হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। তারপর চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য পরিচালন কমিটির প্রথম বৈঠক ডাকবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং আধিকারিক।

যে ১১ জন এ দিন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন নন্দকুমারের তৃণমূল নেতা তথা দলের জেলা (তমলুক) সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দে। তিনি নন্দকুমার নির্বাচন ক্ষেত্রে জয়ী হন। তবে পরিচালন পর্ষদ সদস্য নির্বাচনে দলীয়ভাবে দিব্যেন্দু রায়ের নাম জানানো হয়। তার পরেও একই নির্বাচন ক্ষেত্র থেকেই প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন প্রদীপ। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘স্বেচ্ছায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি।’’ মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানব পড়ুয়া বলেন, ‘‘সুব্রত বক্সীর অফিসে যে বৈঠক হয়েছিল, তার নির্যাস ঠিক ভাবে পৌঁছয়নি। তাই প্রথমে মনোনয়ন করেছিলাম। তবে নেত্রীকে এই বিষয় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে, এটা আমাদের সকলের ব্যর্থতা হিসেবে মনে করছি।’’

কেন মনোনয়ন জমা, আর কেনই বা সেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেন ১১ জন, প্রশ্ন উঠেছে শাসক দলের অন্দরে। এ ব্যাপারে কেউ নাম করে, আবার কেউ নাম না করে উত্তম ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিচ তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডাকে দায়ী করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলছেন, ‘‘জেলা সভাপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন মনোনয়ন দিতে। আবার তিনিই বুধবার রাতে প্রত্যাহারের কথা ফোনে জানান।’’

সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি অবশ্য বলছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের মা, সকলের নেত্রী। ওঁর নির্দেশ বেদ বাক্য। তাই যাঁরা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন, তাঁদেরকে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। নিজেদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও তা মিটে গিয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Contai Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy