Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি দাপটে শিকেয় ভুয়ো ডাক্তার ধরা

শিশু চুরি-কাণ্ড এবং ভুয়ো চিকিৎসকের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার সময় বহু চিকিৎসকই রাতারাতি চেম্বার বন্ধও করে দিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য ভবন অভিযান শুরু না করায় ইদানীং ফের নতুন নতুন চিকিৎসক চেম্বার করতে শুরু করেছেন বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। প্রায় কারও প্রেসক্রিপশনের উপর রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা নেই। শংসাপত্র খতিয়ে দেখার প্রবণতাও শিকেয়।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০০:৪৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সিদ্ধান্ত হয়েছিল নিয়মিত অভিযান চলবে। গড়া হয়েছিল আট জনের কমিটি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে শুরুও হয়েছিল ভুয়ো চিকিৎসক ধরার প্রক্রিয়া।

সে সব প্রায় ছ’মাস আগের কথা। তারপর থেকে তেমন কোনও পদক্ষেপ করতে পারেনি স্বাস্থ্য দফতর বা ওই কমিটি। সৌজন্যে— ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব। স্বয়ং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলছেন, ‘‘ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেই আমরা হিমসিম খাচ্ছি। তাই ওই বিষয়টি নিয়ে সত্যিই নজরদারি শুরু করা যায়নি।’’

মাস ছ’য়েক আগে শিশু চুরি-কাণ্ড এবং ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে হইচই পড়েছিল রাজ্য জুড়ে। পুলিশ ও গোয়েন্দা দফতরের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলও। তদন্তে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জাল শংসাপত্র বিলির ঘটনাও সামনে এসেছিল। জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে নামী হাসপাতালে চাকরি বা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করার প্রমাণও মিলেছিল। পুলিশের জালে ধরাও পড়েছিলেন একাধিক ‘চিকিৎসক’ও।

পশ্চিম মেদিনীপুরেও এমন বহু ভুয়ো চিকিৎসক রয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অভিযানের। শুধু তাই নয়, সমস্ত স্তরের চিকিৎসকদের জন্য কিছু বিধি আরোপ করার সিদ্ধান্তও হয়েছিল।

সূত্রের খবর, প্রেসক্রিপশনের উপর চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সরকারি অনুমোদিত সমস্ত পলিক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের। এমনকী পলিক্লিনিকে নতুন চিকিৎসক বসানোর আগে এবং এখন যাঁরা প্র্যাকটিস করছেন— সকলেরই সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-সহ সমস্ত তথ্য জেলা স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি অনুমোদিত বেসরকারি ক্লিনিকগুলিতে আচমকা পরিদর্শনের কথাও বলা হয়েছিল কমিটিকে। কিন্তু ছ’মাস পর, সে সব কিছুই হয়নি। অভিযোগ, আচমকা পরিদর্শন তো দূর-অস্ত, নির্দেশ ঠিকঠাক মানা হচ্ছে কি না— তাও দেখছে না স্বাস্থ্য দফতর।

সরকারি তথ্যই বলছে, গোটা জেলায় প্রায় ৩০০ সরকার অনুমোদিত পলিক্লিনিক চলছে। ওষুধের দোকানে যুক্ত চেম্বারের সংখ্যা কমপক্ষে ৮০০। পলিক্লিনিক এবং চেম্বারগুলিতে একাধিক চিকিৎসক প্র্যাকটিস করেন। সেখানে নজরদারি প্রায় নেই।

শিশু চুরি-কাণ্ড এবং ভুয়ো চিকিৎসকের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার সময় বহু চিকিৎসকই রাতারাতি চেম্বার বন্ধও করে দিয়েছিলেন। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য ভবন অভিযান শুরু না করায় ইদানীং ফের নতুন নতুন চিকিৎসক চেম্বার করতে শুরু করেছেন বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। প্রায় কারও প্রেসক্রিপশনের উপর রেজিস্ট্রেশন নম্বর লেখা নেই। শংসাপত্র খতিয়ে দেখার প্রবণতাও শিকেয়।

অভিযানে যে ভাটা পড়েছে, তা মানছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার আশ্বাস, ‘‘দ্রুত অভিযান শুরু হবে।’’ তাঁর দাবি, নির্দেশ পাওয়ার পর বেশ কিছু ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের শংসাপত্র স্বাস্থ্য দফতরে জমা দিয়েছিলেন। এখনও কেউ কেউ জমা দিচ্ছেন। তবে যাঁরা সে সব তথ্য জমা দেননি, তাঁদের অনুমোদন নবীকরণ করা হবে না।

Midnapore Fake Doctor ভুয়ো চিকিৎসক ঘাটাল Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy