Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Power Plant

কর্মীদের মারধরের অভিযোগ

পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে মূল অভিযুক্ত দিলীপ রুইদাস ও অলিত রুইদাস-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০২:১২
Share: Save:

ইসিএলের বিদ্যুৎ ও মেকানিক্যাল বিভাগের চার জন কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। এই অভিযোগে মঙ্গলবার ইসিএলের জেকে নগর কোলিয়ারিতে ঘণ্টা দু’য়েক কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখালেন ওই বিভাগের কর্মীরা। নিমচা ফাঁড়ির পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সোমবার খনি লাগোয়া জেমারি গ্রামের মুচিপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশ কোলিয়ারির ওই বিভাগে হামলা চালান বলে অভিযোগ। বিভাগের সুপারভাইজ়ার হরিহর কর্মকার-সহ চার জন বিদ্যুৎকর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এর জেরে হরিহরবাবুর মাথা ফাটে। অমিত ভুঁইয়া নামে অন্য এক বিদ্যুৎকর্মী ডান পায়ে চোট পান। তাঁদের দু’জনকেই প্রথমে সংস্থার সাতগ্রাম এরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। সেখান থেকে তাঁদের সংস্থার কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।

কেন এই ঘটনা? স্থানীয় সূত্রের দাবি, জেকে নগর কোলিয়ারি এলাকায় বেশির ভাগ বাড়ি ও জেকে নগর বাজারের দোকানগুলি ইসিএলের দেওয়া বিদ্যুতের উপরে নির্ভরশীল। অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরে দৈনিক ১২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ-সংযোগ থাকছে না। মুচিপাড়ার বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা বিদ্যুৎ বিভাগের দু’জন কর্মীর সঙ্গে দেখা করে সমস্যার কথা জানাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে হরিহরবাবু সেখানে তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যেতে বললে বচসা শুরু হয়। হরিহরবাবুর নেতৃত্বে গ্রামবাসীর উপরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের। তবে, কোলিয়ারির এজেন্ট কমলেশ পাণ্ডের দাবি, ‘‘গ্রামবাসীর উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কয়েকশো গ্রামবাসীর উপরে কী ভাবে হামলা চালাবেন কয়েকজন কর্মী?’’ রাতেই কমলেশবাবু রানিগঞ্জের নিমচা ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে মূল অভিযুক্ত দিলীপ রুইদাস ও অলিত রুইদাস-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরিবারের লোকজনের সংবাদমাধ্যমের কাছে অবশ্য দাবি, ধৃতেরা কোনও ‘দোষ’ করেননি। মঙ্গলবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।

এ দিকে, সাতগ্রাম এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ মল্লিক জানান, তাঁদের সংস্থা লাগোয়া এলাকায় বিনা খরচে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বাধ্য নয়। মাস তিনেক আগে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করা হয়েছিল। আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জির ভিত্তিতে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বাড়িতে অস্থায়ী ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরে জেকে নগর বাজার-সহ লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেন। এর ফলে, ট্রান্সফর্মারে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এই কারণে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটছে। অভিজিৎবাবুর দাবি, ‘‘এলাকাবাসীকে অবৈধ ভাবে ‘হিটার’ জ্বালানো-সহ বাণিজ্যিক কারণে বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ করতে হবে। না হলে এই বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’’ বিধায়ক তাপসবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবেই আমি বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Power Plant Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE