প্রস্তুতি: তমলুকের হ্যামিল্টন হাইস্কুলে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। মাধ্যমিকের মতো এই পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস রুখতে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে এক ঘণ্টা আগে পৌঁছনোর নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু সেই নির্দেশে সোমবার চিন্তা বাড়িয়েছে পরীক্ষার্থীদের। সৌজন্য—বসন্তে জোড়া কালবৈশাখী।
জোড়া কালবৈশাখীর জেরে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় রবিবার গভীর রাতে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। হয়েছে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টি। পরীক্ষার আগের দিন সোমবারই ছিল আকাশের মুখ গোমড়া। কোথাও কোথাও বৃষ্টিও পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এতেই উদ্বিগ্ন পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের একাংশ। বৃষ্টিবাদলায় সঠিক সময়ে দূরদূরান্তের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো যাবে তো!
উল্লেখ্য, এবারের নতুন নিয়ম অনুসারে, সকাল ১০ টা থেকে পরীক্ষা শুরুর নির্ঘণ্ট হলেও পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছাতে এক ঘণ্টা আগে সকাল ৯টা মধ্যে।
শুধু পরীক্ষার্থীরা নন, দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষদের একাংশও। তাঁদের চিন্তা, ঝড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হলে পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে। কারণ, মেঘলা হলে আলোর পরিমাণ কম থাকবে। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্রে আলোর নিরবিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা রাখতে হবে। হলদিয়া গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড বিবেকানন্দ বিদ্যাভবনের প্রধান শিক্ষক হরিদাস ঘটক বলেন, ‘‘আবহাওয়ার পরিস্থিতি ভাল নয়। বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক রাখতে আমরা চার হাজার টাকা দিয়ে একটি জেনারেটর ভাড়া করেছি।’’ তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলে ৯টি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সিট পড়েছে। হ্যামিল্টন হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোবিন্দপ্রসাদ শাসমল বলেন, ‘‘আমাদের জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। তাই আলোর অসুবিধা হবে না।’’
পরীক্ষার আগের দিন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে অভিযোগ করেছেন কিছু পড়ুয়া। নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাট আদর্শ হাইস্কুলের উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সায়নদীপ ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘সকালে বাড়িতে পড়তে বসেছিলাম। কিন্তু বারবার লোডশেডিং হওয়ায় পড়ার অসুবিধা হচ্ছিল। ঝড়-বৃষ্টির আবহাওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্রে এমনটা হলে সমস্যায় পড়তে হবে।’’ একই আশঙ্কায় রয়েছেন তমলুকের শঙ্করআড়ার পীযুষ সামন্ত, নন্দকুমার ব্লকের কাঞ্চনপুর গ্রামের অর্পণ বক্সীর মতো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা।
জেলার উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহের যাতে বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য অবশ্য বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে বিদ্যুৎ দফতর। প্রশাসন এবং শিক্ষা দফতরের সূত্রে খবর, এবার জেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৪ হাজার ১২১ জন। মোট পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৬৭টি।
জেলা বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের জেনারেল ম্যানেজার শ্যামলকুমার হাজরা বলেন, ‘‘ঝড়-বৃষ্টিতে জেলায় বিদ্যুতের লাইনের ক্ষতি হয়নি। স্থানীয় ভাবে যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছিল, সেখানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy