বিতর্কিত: এই চিঠিই কেশপুর কলেজে পাঠানো হয়। নিজস্ব চিত্র
কলেজে কলেজে পড়ুয়া ভর্তিতে ছাত্র সংসদের খবরদারি এবং টাকা লেনদেন নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনিয়ম বন্ধে কড়া বার্তাও দিয়েছেন। সে সব উড়িয়েই অবশ্য কলেজে ছাত্র ভর্তিতে অরাজকতা চলছে। আর তাতে জড়াচ্ছে শাসক দলের নেতাদের নাম।
আজ, সোমবার কলকাতায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর সমাবেশ রয়েছে। প্রধান বক্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে কলেজে ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে। মেধা তালিকায় অনেক পিছনের দিকে নাম থাকা বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীকে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার জন্য লিখিত সুপারিশ করেছেন কেশপুর ব্লকের অন্তর্গত মুগবসান অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি শেখ হাসানুরজামান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ প্যাডের কাগজে ওই সুপারিশপত্র তিনি পাঠিয়েছেন কেশপুর কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ সানাউল্লার কাছে। সানাউল্লা তা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠান। চিঠি পাঠানোর কথা মানছেন হাসানুরজামান। তাঁর কথায়, “জোরাজুরি করিনি। অনুরোধ করেছিলাম মাত্র।’’
টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ সানাউল্লার অবশ্য দাবি, “আমি কোনও সুপারিশপত্র পাইনি। তাছাড়া, এখন সব তো অনলাইন। সুপারিশে ভর্তির সুযোগ কোথায়!” ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়ারও দাবি, “ভর্তি প্রক্রিয়া চলেছে মেধার ভিত্তিতেই।’’ অথচ কলেজেরই এক সূত্রে খবর, মেধা তালিকার অনেক পিছনের দিকে নাম থাকা সত্ত্বেও ওই তৃণমূল নেতার সুপারিশপত্রে নাম থাকা তিন ছাত্র ও একজন ছাত্রী কেশপুর কলেজে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন।
এই প্রথম নয়, এর আগেও কেশপুর কলেজে মেধা তালিকার পিছনের দিকে নাম থাকা পড়ুয়াদের ভর্তি করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়েই এ কাজ করানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলি। কেশপুর কলেজের ঘটনার প্রেক্ষিতে ডিএসওর জেলা নেতা দীপক পাত্রের কটাক্ষ, “টিএমসিপি ভর্তিতে সিন্ডিকেট রাজ চালাচ্ছে।’’ আর এসএফআইয়ের জেলা নেতা সৌমিত্র ঘোড়ইয়ের বক্তব্য, “এখন তো খোলাখুলি আসন বিক্রি হয়। আসন বেচাকেনা হয়।’’ ছাত্র পরিষদ নেতা মহম্মদ সইফুলও বলছেন, “শুধু কেশপুর নয়, জেলার অনেক কলেজেই টাকা নিয়ে ভর্তির অভিযোগ সামনে এসেছে।’’
কিন্তু অনলাইনে ভর্তি চালুর পরেও কীভাবে মেধা তালিকায় পিছনের দিকে নাম থাকা পড়ুয়ারা কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন? জানা গিয়েছে, শাসক দলের চাপেই এ ক্ষেত্রে অনিয়ম হচ্ছে। দেখানো হচ্ছে, মেধা তালিকায় প্রথম দিকে থাকা অনেক পড়ুয়াই কাউন্সেলিংয়ে আসেনি। আবার অনেক ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা কম করে দেখা হচ্ছে, যাতে শাসক ঘনিষ্ঠদের মেধার মানদণ্ড ছাড়াই ভর্তির সুযোগ দেওয়া যায়।
কেশপুর কলেজের ঘটনা নিেয় টিএমসিপির জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দীর বক্তব্য, “কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে যদি টিএমসিপি-র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তাহলে প্রশাসনকে অথবা আমাদের জানানো হোক। দুর্নীতি হলে সংগঠন তা বরদাস্ত করবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy