Advertisement
E-Paper

মিড-ডে মিলে অ্যাপ্রন না পরলে বন্ধ মজুরি

এ বার কড়া হচ্ছে প্রশাসন। ঝাড়গ্রাম ব্লক প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনও স্কুলে রান্নার সময় অ্যাপ্রন, মাস্ক, গ্লভস, হেড গিয়ার না পরলে ওই সদস্যের সাম্মানিক বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাতেই বিপাকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০২:০৮
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

গাছ কোমরে জড়ানো শাড়ি, মাথার উপর চূড়া খোঁপা শক্ত করে বাঁধা, হাতে খুন্তি, সামনে উনুন, হাঁড়ি-কড়া— রান্নাঘরের এমন ছবিতেই তো অভ্যস্ত বাংলার গাঁ-গঞ্জ। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি বড় বালাই! তাই স্কুলের মিড-ডে মিল রান্না করতে গেলে নাক, মুখ, হাত, মাথা সব ঢেকে নেওয়ার নিদান রয়েছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন। স্কুলে স্কুলে বিলি হয়েছে অ্যাপ্রন, মাস্ক, গ্লভস, হেড গিয়ার। কিন্তু নিয়ম মানে কে? ও ভাবে রান্না করা যায় নাকি? প্রশ্ন তোলেন দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা।

কিন্তু এ বার কড়া হচ্ছে প্রশাসন। ঝাড়গ্রাম ব্লক প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনও স্কুলে রান্নার সময় অ্যাপ্রন, মাস্ক, গ্লভস, হেড গিয়ার না পরলে ওই সদস্যের সাম্মানিক বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাতেই বিপাকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা।

গত বছর ঝাড়গ্রাম ব্লক প্রশাসন মিড-ডে মিল রান্না হয় এমন ৩৮৩ টি স্কুলে অ্যাপ্রন-সেট দিয়েছিল। খরচ হয়েছিল প্রায় তিন লক্ষ টাকা। অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ঝাড়গ্রাম ব্লকই প্রথম এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়। প্রশাসনের দাবি, শুরুতে রাঁধুনিরা অ্যাপ্রন-সেট ব্যবহার করতেন। কিন্তু এক বছরেই ছবিটা গিয়েছে বদলে।

কয়েক মাস আগে মিড-ডে মিল খেয়ে একটি প্রাথমিক স্কুলের কয়েকজন পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে। জানা যায়, নিয়মিত হেড গিয়ার, মাস্ক, গ্লাভস না পরেই ওই স্কুলের রাঁধুনি ও সহযোগীরা রান্না করেন। এমনকী অনেক সময় রান্নার আগে হাতও পরিষ্কার করেন না তাঁরা। এরপরই টনক নড়ে প্রশাসনের। অন্য স্কুলগুলি সম্পর্কেও খোঁজ শুরু করেন ঝাড়গ্রামের বিডিও সুদর্শন চৌধুরী। আচমকা কয়েকটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে তিনি দেখেন, কেউই অ্যাপ্রন-সেট ব্যবহার করছেন না। শেষ পর্যন্ত কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে ঝাড়গ্রাম ব্লক প্রশাসন। আপ্রন-মাস্ক না পরে রান্না করলে রাঁধুনিদের সাম্মানিক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই রাধানগর, বাঁধগোড়া, সাপধরা, মানিকপাড়া, নেদাবহড়া, পাটাশিমুল, চন্দ্রি অঞ্চলের বেশ কিছু স্কুলকে অনিয়মের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু কেন অ্যাপ্রন-সেট ব্যবহার করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা?

ঝাড়গ্রাম ব্লকের রাধানগর অঞ্চলের একটি প্রাথমিক স্কুলের রাঁধুনি ময়না সরেন ও বারি কিস্কুর সাফ কথা, “আমরা গ্রামের মহিলা। জীবনে ও সব পরে রান্না করার অভ্যেস নেই। মাথা ঢেকে, হাত ঢেকে মুখ ঢেকে আমাদের রান্না করতে খুব অসুবিধে হয়। পারি না।”

যদিও তা শুনতে নারাজ বিডিও সুদর্শনবাবুর। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘কোনও অজুহাত চলবে না। অ্যাপ্রন-না পরলে রাঁধুনিদের সাম্মানিক বন্ধ হবে।” কিন্তু রান্নাঘরে নজর রাখবে কে? সে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকদের উপর। সুদর্শনবাবু বলেন, ‘‘আমরা শিক্ষক-অভিভাবকদের অনুরোধ করেছি, এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে। অনিয়ম হলেই আমাদের কাছে খবর দিতে।’’

Midday meal Wages Aprons
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy