Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Bird

আসছে শীত, বাড়ছে পাখি শিকারীদের আনাগোনা

স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিনব ভাবে চুনোপুঁটি মাছের মধ্যে বিষ ঢুকিয়ে পাখিদের খাবারের টোপ তৈরি করে শিকারিরা।

পাখি শিকারের টোপ তৈরি করা হচ্ছে।

পাখি শিকারের টোপ তৈরি করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ০২:০০
Share: Save:

এলাকায় রয়েছে বাগুই এবং কেলেঘাইয়ের মতো নদী। সেই নদীর অববাহিকায় রয়েছে জীববৈচিত্র্যের প্রাচুর্য। শীতের মরসুমে পরিযায়ী পাখি থেকে অন্য একাধিক বিরল প্রজাতির পাখির ভিড় লেগেই থাকে। আর আসন্ন শীতের মুখে সেই পাখি শিকারে আসতে শুরু করেছে পাখি শিকারীরা।

পটাশপুর থানা এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়েই রয়েছে বাগুই ও কেলেঘাই নদী। পটাশপুর-১ ব্লকের গোকুলপুর, গোপালপুর, চিস্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ১৪ কিলোমিটার অংশ জুড়ে রয়েছে কেলেঘাই নদীর বিস্তীর্ন অববাহিকা। মিষ্টি জলে পুষ্ট কেলেঘাই নদীতে মাছের আনাগোনা। নদী সংলগ্ন জলাভূমিতে পোকামাকড় এবং নদীর পাড়ে হিজল, হেতাল গাছের ভিড় থাকায় পাখিদের বাসবাসের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শীতের শুরুতে রাশিয়া ও সাইবেরিয়ার বহু পাখি বাগুই ও কেলেঘাই নদী সংলগ্ন এই জলাভূমিতে আসে। এছাড়া, সারা বছর বক, জলপিপি, বন মোরগ, শামুকখোলের পাখিরা তো রয়েছেই।

এই সব পাখির মাংসের লোভে এক শ্রেণির লোকেরা হামেশাই হানা দেয় কেলেঘাইয়ের জলাভূমি এলাকায়। যাদের মধ্যে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং এলাকার উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকেরা। শীতের মরসুমে তাঁদের আনানগোনা বেড়ে যায়। দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী ওই পরিবারগুলি পুষ্টিকর খাবারের সন্ধানে পাখি শিকার করে। এবার শীতের শুরুতে ফের সক্রিয় হয়েছে সেই সকল চোরা শিকারীরা। পটাশপুর-১ ব্লকের জীব বৈচিত্র্য কমিটির সম্পাদক সোমনাথ দাস অধিকারী বলেন, ‘‘এক সম্প্রদায়ের মানুষ সুস্বাদু মাংসের চাহিদায় পাখি শিকার করে। এটা অপরাধ। প্রশাসনের উচিত এলাকায় সচেতনতা বাড়িয়ে পাখি শিকার বন্ধ করা।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিনব ভাবে চুনোপুঁটি মাছের মধ্যে বিষ ঢুকিয়ে পাখিদের খাবারের টোপ তৈরি করে শিকারিরা। তা কোনও জলাভূমি ও ঝিলের ধারে ফেলে রাখে। পাখিরা তা খেয়েই শিকারিদের হাতে ধরা পড়ছে। এই পন্থায় প্রতিদিন শয়ে শয়ে জলপিপি, শামুকখোল, বকের মতো পাখি মারা হচ্ছে বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পক্ষী শিকারি বলছেন, ‘‘খাবারের জন্যই শিকার করি। এত আইন বুঝি না।’’ বেআইনি পাখি শিকার প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন দফতরের আধিকারিক অনুপম খান বলেন, ‘‘এই বিষয়টি আমাদের নজরে নেই। দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষকে সচেতনতার জন্য এলাকায় প্রচারও চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bird Hunter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE