হলদি নদীর তীরে পরপর খাবার দোকান। এই সে দিনও সেখানে কাকের উৎপাতে নাজেহাল হতেন দোকানিরা। সামান্য খাবার পেলেই একের জায়গায় জুটে যেত দশটা কাক। সেখানেই এখন কাকের মড়ক।
শুধু হলদি নদীর তীরে নয়, হলদিয়া শহরের নানা প্রান্তে গত একমাস ধরে বেড়েছে কাকের মৃত্যু। সকাল হলেই রাস্তার ধারে ধারে মরা কাক পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজারে সংবাদপত্র বিক্রি করেন নয়ন শীট। ইদানীং রোজ সকাল বেলায় রাস্তায় মরা কাক পড়ে থাকতে দেখে নয়ন বলছেন, ‘‘প্রথমে বিষয়টায় তেমন গুরুত্ব দিইনি। তবে প্রতিদিন একইভাবে মরা কাক পড়ে থাকতে দেখে অবাক হয়েছি।’’
শহরের দুর্গাচক নিউ মার্কেট চত্বরেও প্রতিদিন একাধিক মরা কাক পড়ে থাকতে দেখে অবাক স্থানীয়রা। এলাকার বাসিন্দা ঝিলিক দত্ত বলছেন, ‘‘বাড়ির সামনে হামেশাই কাকের দেহ পড়ে থাকছে। আগে এমন অভিজ্ঞতা কোনও দিন হয়নি।’’ এ ভাবে পরপর কাকের মৃত্যুর কারণ কী?
অ্যাভিয়ান ম্যালেরিয়া
•এক ধরনের কিউলেক্স মশা থেকে পাখিরা এই রোগে আক্রান্ত হয়। জীবাণুর নাম: প্লাসমোডিয়াম রেলিকটাম।
•একটি পাখি থেকে আর একটির দেহে সংক্রমিত হয় রোগ জীবাণু। তবে মানুষের শরীরে কোনও ক্ষতি হয় না।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ-অধিকর্তা কামদেব সর্দারের দাবি, ‘‘মৃত কাকের নমুনা কলকাতায় পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে, ‘অ্যাভিয়ান ম্যালেরিয়া’তে একের পর এক কাকের মৃত্যু হচ্ছে।’’ তিনি জানান, অ্যাভিয়ান ম্যালেরিয়ায় মানুষের কোনও ক্ষতি হয় বলে এখনও প্রমাণ মেলেনি। তবে আরও গবেষণার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরেই পরপর কাকের মৃত্যুর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। প্রাণিসম্পদ দফতরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’ হলদিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘শহরের কোথাও কাকের দেহ পড়ে থাকতে দেখলে দ্রুত সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাফাইকর্মীরা তৎপর রয়েছেন।’’
(তথ্য: প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর)