E-Paper

শিউলিদের ভীমরুল আতঙ্ক, সচেতন করছে পঞ্চায়েত

পঞ্চায়েত প্রধান রামকৃষ্ণ দাস বলেন, “হলদিয়া-মহিষাদল অঞ্চলে এই সময় শতাধিক শিউলি রস কাটতে আসেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৬
চলছে খেজুর রস সংগ্রহ করার কাজ।

চলছে খেজুর রস সংগ্রহ করার কাজ। ফাইল চিত্র।

শীতের সঙ্গে শুরু হয়েছে খেজুরের রসের মরসুম। কিন্তু, রস কাটাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ভীমরুল। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি মহকুমায় এক মাঝ বয়সি ব্যক্তির প্রাণ গিয়েছিল ভীমরুলের হুলের বিষে। অন্য দিকে, মহিষাদলের বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতালেও ভীমরুলের আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে এসেছিলেন ১০জনের বেশি পথচারী। এই পরিস্থিতিতে শিউলি এবং‌ সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়াতে এগিয়ে এল মহিষাদলের ইটামগরা-২ পঞ্চায়েত।

পঞ্চায়েত প্রধান রামকৃষ্ণ দাস বলেন, “হলদিয়া-মহিষাদল অঞ্চলে এই সময় শতাধিক শিউলি রস কাটতে আসেন। ওঁরা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন। ভীমরুলের হুলের বিষে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা পঞ্চায়েত অফিসে বড় বড় নোটিস দিয়েছি, ফ্লেক্স ঝুলিয়েছি।” সেই বিজ্ঞপ্তিতে লেখা, ‘সন্ধ্যার পর বা ভোরের আগে গাছে না ওঠা, টর্চ না জ্বালানো, গাছে ওঠার আগে চারদিক ভাল করে দেখে নেওয়া’র মতো বিষয়গুলি।

হলদিয়ার বাবাজিবাসায় শাল দিয়েছেন অপর্ণা দাস। তিনি বলেন, “ভীমরুলের হুলের বিষ যে কী ভয়ংকর, যে খেয়েছে সে-ই জানে। একটা বাসায় শতাধিক ভীমরুল থাকে। আলো দেখলেই ছুটে আসে।” গেঁয়োখালির গাছি রণজিৎ মণ্ডলের কথায়, “আগে কেয়া ঝোপে থাকত। এখন জেলায় কেয়া গাছ কমে গিয়েছে। খাদ্যাভাবে রসের লোভে খেজুর গাছের কাছে বাসা বাঁধছে।”

পরিবেশ বিজ্ঞানী অসীমকুমার মান্নার বক্তব্য, “বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে শীতকাল ক্ষণস্থায়ী হয়েছে। ভীমরুলের প্রজনন চক্রে গোলমাল হয়েছে। এরা ফুলের পরাগায়নে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অসময়ে সক্রিয় হতেই মানুষের সঙ্গে সংঘাত বেড়েছে। বাসা ভাঙা বা পোড়ানো উচিত নয়।” কী ভাবছে বন দফতর? নন্দকুমারের রেঞ্জার অতুলকৃষ্ণ দে-র কথায়, “ঝোপঝাড় কমায় ভীমরুল মানুষের কাছাকাছি আসছে।” বাসা দেখলে দমকলকে ফোন করার পরামর্শও দিচ্ছেন তিনি।

হলদিয়ার এক চিকিৎসক রাকেশ মণ্ডল বলেন, “একাধিক ভীমরুলের আক্রমণে অ্যানাফাইল্যাকটিক শক হতে পারে। আক্রান্তকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসতে হবে। নিজের ডাক্তারি করা উচিত নয়।” মহিষাদলের বাসিন্দা অর্ণব রায় বলেন, “রস কাটা থামবে না, পৌষ পিঠে-পায়েসের ঐতিহ্য থাকবেই। তবে সামান্য সচেতনতা আর নির্দেশ মানলে শিউলিরা নিরাপদে গাছে উঠতে পারবেন, গ্রামবাসীও নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mahisadal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy