Advertisement
E-Paper

মন্দ কপাল! অ-মাইক শুভেন্দু

যাঁরা হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর এই মরিয়া চেষ্টা, সেই শুভেন্দু অধিকারীর কর্মী সম্মেলনেই প্রকাশ্যে এল শাসক দলের অগোছালো অবস্থা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০০:৫১
ব্যাটারিতে চলছে মাইক। শব্দ পরীক্ষা এক নেতার। —নিজস্ব চিত্র।

ব্যাটারিতে চলছে মাইক। শব্দ পরীক্ষা এক নেতার। —নিজস্ব চিত্র।

জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারে নেত্রী আস্থা রেখেছেন তাঁর উপর। তিনি আশ্বস্ত করেছেন নেত্রীকে। ঝাড়গ্রাম পুনরুদ্ধারে ভরসা জুগিয়েছেন।

যাঁরা হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর এই মরিয়া চেষ্টা, সেই শুভেন্দু অধিকারীর কর্মী সম্মেলনেই প্রকাশ্যে এল শাসক দলের অগোছালো অবস্থা। শুভেন্দুর বক্তৃতার মাঝেই তেল ফুরোল জেনারেটরের। নির্বাক হল মাইক্রোফোন। ব্যাটারির সাহায্য নিয়ে কোনওক্রমে বক্তৃতা শেষ করলেন পরিবহণ মন্ত্রী। দিনের শেষে ময়নাতদন্তে জানা গেল, মন্ত্রীর সভার জন্য নাকি বিদ্যুতের সংযোগই নেওয়া হয়নি। ভরসা করা হয়েছিল জেনারেটরের উপর। তাতেও যে তেল বাড়ন্ত খেয়াল ছিল না তা-ও। সোমবার এ সবই ঘটল ঝাড়গ্রাম রবীন্দ্রপার্কে। সেখানেই এ দিন আয়োজন করা হয়েছিল কর্মী সম্মেলনের।

শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্ত রায় ছিলেন সভার আয়োজনের দায়িত্বে। মঞ্চের সঙ্গে ছাউনি দেওয়া অংশে কর্মীদের বসার জায়গা করা হয়েছিল। সভা শুরু হয়ে গিয়েছিল দুপুরেই। বিকেল তিনটে নাগাদ সভাস্থলে এসে পৌঁছন শুভেন্দু। সাড়ে তিনটে নাগাদ বলতে ওঠেন তিনি। মিনিট দশেক বলেছেন। সিপিএমের সঙ্গে তুলনা টেনে বিজেপি-র বিরুদ্ধে সবে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছেন। এমন সময় হঠাৎ বন্ধ মাইক্রোফোন। বন্ধ হয়ে যায় আলো এবং পাখাও। রুমাল দিয়ে বার বার মুখ মুছতে দেখা যায় শুভেন্দুকে। নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলার পুলিশ কর্তারা বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় ফোন করে লোডশেডিংয়ের কারণ জানতে চান। অবশেষে জানা যায়, কর্মী সম্মেলনের জন্য দফতর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগই নেওয়া হয়নি।

প্রায় দশ মিনিট মঞ্চে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন শুভেন্দু। মাইক্রোফোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী ব্যাটারির সঙ্গে দু’টি মাইকের সংযোগ করে দেন। শুভেন্দু এরপর বলেন, ‘‘আমি পালিয়ে যাওয়ার লোক নই। আমাকে যদি এভাবে এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হতো তাতে আমার কোনও সমস্যা নেই। মাইকের ব্যবস্থা না হলে আমি খালি গলাতেও বলে দিতাম। এটা হয়তো টেকনিক্যাল ফল্ট। আমার অভিযোগ করার কিছু নেই।’’ শুভেন্দু জানান, ব্যস্ততার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলার সাংগঠনিক কাজে তিনি পশ্চিম মেদিন‌ীপুরের নেতা নির্মল ঘোষের সাহায্য নেবেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া জেলা কোর কমিটি বহাল থাকবে। আলোচনার ভিত্তিতে এক-দুজনকে কমিটিতে নেওয়া হবে। আগামী ২৩ জুলাই জেলার ৮টি ব্লকের এবং ঝাড়গ্রাম শহরের নেতৃ্ত্বদের নিয়ে তিনি বৈঠক করবেন।

এ দিন কর্মীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে চেয়েছেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘আমি সংবাদ মাধ্যমে লেখার জন্য আর টিভিতে দেখানোর জন্য কথা বলি না। তাই আমার সংগঠনের কোথায় দুর্ব‌লতা আছে, কোথায় পঞ্চায়েতের সঙ্গে দলের সমন্বয়ের অভাব আছে, কোথায় নেতৃত্বকে পরিবর্তন করতে হবে সে ব্যাপারে আমি আপনাদের কাছে পরামর্শ নেব। কিন্তু প্রকাশ্য সভায় এসব বলব না। এটা দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়।’’ এ জায়গা যে তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন তা জানাতেও ভোলেননি শুভেন্দু। কর্মীদের করণীয় বাতলে দিয়েছেন। শাখা সংগঠন শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। সভা শেষে বৃষ্টির মধ্যে নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহরে পদযাত্রাও করেছেন।

মন্ত্রী কর্মী সম্মেলন করছেন। সেখানে শুধু জেনারেটরের উপর ভরসা করা হল কেন? জেলা সভাপতি বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে জেনারেটর ছিল।’’ সংগঠন শক্তিশালী করার কথা বলছেন নেতা। সেখানে এমন একজন কর্মী মিলল না যিনি দেখে নেবেন জেনারেটরে তেল পর্যাপ্ত আছে কি না! সভার উদ্যোক্তা প্রশান্ত শুধু বলছেন, ‘‘কী আর বলব। আমার কপালটাই মন্দ।’’

Suvendu Adhikari TMC শুভেন্দু অধিকারী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy