Advertisement
E-Paper

টেট ফর্ম, ভোগান্তিতে ব্যাঙ্ক গ্রাহকরাও

প্রাথমিক টেটের ফর্ম বিলি ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের ভোগান্তি তো রয়েছেই। সমস্যায় পড়ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরাও। ভিড় ঠেলে ব্যাঙ্কে ঢুকতে গিয়ে তাঁদের চূড়ান্ত হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পুলিশ পরিচয় যাচাই করতে চাওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে। অব্যবস্থার মাসুল দিচ্ছেন ব্যাঙ্ক কর্মীরাও। সকাল সাড়ে ন’টা-দশটায় ঢুকে বেরোচ্ছেন রাত দশটায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০১:১৪
সাধারণ গ্রাহকদের পাশবই দেখতে চাইছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

সাধারণ গ্রাহকদের পাশবই দেখতে চাইছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

প্রাথমিক টেটের ফর্ম বিলি ঘিরে ছাত্রছাত্রীদের ভোগান্তি তো রয়েছেই। সমস্যায় পড়ছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরাও। ভিড় ঠেলে ব্যাঙ্কে ঢুকতে গিয়ে তাঁদের চূড়ান্ত হয়রানির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পুলিশ পরিচয় যাচাই করতে চাওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে। অব্যবস্থার মাসুল দিচ্ছেন ব্যাঙ্ক কর্মীরাও। সকাল সাড়ে ন’টা-দশটায় ঢুকে বেরোচ্ছেন রাত দশটায়।

কো-অর্ডিনেশন কমিটির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক গঙ্গাধর বর্মন বলেন, “রাজ্য সরকারের সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই এই পরিস্থিতি হল। কেন প্রাথমিক টেটে অনলাইন ব্যবস্থা চালু হল না বুঝছি না।” ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংগঠনের এক সদস্যেরও মত, “আগে থেকে সঠিক পরিকল্পনা করা হলে বিশৃঙ্খলা এড়ানো যেত।”

ভোগান্তিতে পড়ে টেট পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি ক্ষুব্ধ ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরাও। বিশেষ করে পেনশন ভোগী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। মিনা হাজরা, খাঁদুবালা আদকের মতো অনেক পেনশন প্রাপকই মেদিনীপুরের একটি ব্যাঙ্কে এসে ভিড়ের ঠেলায় পেনশন না নিয়েই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হন। তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে নারাজ। জেলার লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (এলডিএম) সমরেন্দ্র ষন্নিগ্রাহী শুধু বলেন, “কিছু সমস্যা হবেই। সমস্যা হলেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” ‘বেঙ্গল প্রোভেনশিয়াল ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক আশিস ঘোষ বলেন, “এত ভিড় হলে সমস্যা হবেই। তবে কর্মীরা সব রকম চেষ্টা করছেন।”

খড়্গপুর মহকুমার বেলদায় বৃহস্পতিবার থেকে যে ব্যাঙ্কের শাখায় টেটের ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে, এ দিন সেখানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বৃহস্পতিবার ওই এলাকার দোকানপাট বন্ধ থাকায় সমস্যা হয়নি। কিন্তু কোটিপতি রোডের ধারে বিভিন্ন পাইকারি দোকানে ব্যবসা মার খায় বিপুল সংখ্যক কর্মপ্রার্থীর ভিড়ে। ভুষিমালের পাইকারি ব্যবসায়ী দুয়ারকা প্রসাদ খাণ্ডেলওয়াল বলেন, “ব্যাঙ্কের উচিত ছিল অন্যত্র কাউন্টার খোলা। ভিড়ের চাপে তো আমাদের মালপত্র ওঠানো-নামানো বন্ধ হয়ে গেল। অনেক ক্ষতি হল।’’ প্রবল ভিড়ে বিপর্যস্ত হয় ব্যাঙ্কের পরিষেবাও। গ্রাহক জ্ঞানেন্দ্রনাথ পাত্র, দীপককুমার দাসেরা বলেন, “এত ভিড় যে সামান্য কাজেও সময় লেগেছে এক ঘন্টা।’’ ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার সুলক্ষ্মণ শর্মার কথায়, “ভিড়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের সমস্যা হচ্ছিল। পরে পুলিশ এসে ভিড় সামলেছে। ব্যাঙ্কের পরিষেবা সচল ছিল।’’ এ দিকে, টেটের ফর্ম দেওয়া ঘিরে শুক্রবারও ভোগান্তি অব্যাহত ছিল। ভোর থেকে লম্বা লাইন, মাঝেমধ্যে তুমুল বিশৃঙ্খলা। পশ্চিম মেদিনীপুরের চারটি মহকুমার প্রতিটিতে গোড়ায় একটি করে ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে বৃহস্পতিবার থেকে আরও তিনটি ব্যাঙ্কে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়। শুক্রবার থেকে সাতবাঁকুড়া এবং গোপীবল্লভপুর, এই দুই এলাকার ব্যাঙ্কেও ফর্ম মিলছে। অর্থাত্‌ সব মিলিয়ে ন’টি ব্যাঙ্ক থেকে।

প্রাথমিক টেটের ফর্ম কেন অনলাইনে দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্ন উঠছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি উত্তম সাঁতরা বলেন, “ফর্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত ছিল।” অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) জেলা সভাপতি স্বরূপ মাইতি বলেন, “রাতে লাইন দিয়ে দুপুরে ফর্ম মিলছে। ব্যাঙ্কের সংখ্যা বাড়ানো হলে এই সমস্যা হত না।”

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অবশ্য বক্তব্য, অনলাইনে অ্যাডমিট কার্ড পেতে সময় লাগত। এ ক্ষেত্রে ফর্ম জমা দিলেই হাতেনাতে অ্যাডমিট কার্ড পাচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা বলেন, “আর সমস্যা নেই। আগে চারটি ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম দেওয়া হচ্ছিল। এখন আরও পাঁচটি ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে, ছাত্রছাত্রীদের অনেকটা সুরাহা হয়েছে।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) আমিনুল আহসানও বলেন, “ফর্ম বিলি কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ফলে, আর সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

tet Bank customer midnapore money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy