Advertisement
E-Paper

দেওয়াল তো দখলে, প্রার্থী কই

পঞ্চায়েত নির্বাচনেও প্রার্থী দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিল তারা। প্রার্থীদের সমর্থনে দেওয়াল লিখনের জন্য গ্রামের অনেক বাড়ির দেওয়ালে সাদা চুনকামের ছোপ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু ভোটের মুখে দেওয়াল দখলে এগিয়ে থাকলেও কয়েকটি গ্রামের সেই দেওয়ালে এখনও কালির আঁচড়টুকুও পড়েনি।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৫
ফাঁকা দেওয়াল। নিজস্ব চিত্র

ফাঁকা দেওয়াল। নিজস্ব চিত্র

গত পাঁচ বছর ধরে পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে জেলা তথা সারা রাজ্যে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরেও পাঁশকুড়া ব্লকের রঘুনাথবাড়ি পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রেখেছিল বামফ্রন্ট। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও প্রার্থী দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিল তারা। প্রার্থীদের সমর্থনে দেওয়াল লিখনের জন্য গ্রামের অনেক বাড়ির দেওয়ালে সাদা চুনকামের ছোপ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু ভোটের মুখে দেওয়াল দখলে এগিয়ে থাকলেও কয়েকটি গ্রামের সেই দেওয়ালে এখনও কালির আঁচড়টুকুও পড়েনি।

দেওয়াল দখলের লড়াইয়ে এমন অবস্থা কেন?

কারণ, এ বার ওই সব গ্রামের পঞ্চায়েত আসনে দলীয় প্রার্থী নেই। বামফ্রন্ট-সহ বিরোধী কোনও দলের প্রার্থী না থাকায় রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫টি আসনের মধ্যে তিনটিতে ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। গ্রাম পঞ্চায়েতের সুন্দরনগর পূর্ব, সুন্দরনগর দক্ষিণ ও পূর্ব শুকুতিয়া—এই তিনটি পঞ্চায়েত আসনে কোনও বিরোধী প্রার্থী থাকায় শাসক দল জিতে গিয়েছে। ফলে প্রচারের সুযোগ না পাওয়ায় ওই সব পঞ্চায়েতে এখন ফাঁকাই পড়ে রয়েছে বামফ্রন্টে প্রার্থীদের জন্য দখল করা দেওয়াল।

পাঁচ বছর পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থেকেও প্রার্থী দিতে পারলেন না কেন?

পঞ্চায়েতের বিদায়ী সিপিএম সদস্য রবীন্দ্রনাথ সামন্তের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েতের ১৫টি ও ৩টি পঞ্চায়েত সমিতি আসনে আমরা মনোনয়ন জমার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। দেওয়াল লিখনের প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে তৃণমূলের লোকজনের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়। ফলে প্রথমে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায়নি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে আমরা তমলুকে মহকুমা শাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলাম। সব নথিপত্র তৈরি করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার লাইনে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু সেখানেও তৃণমূলের লোকজনের বাধায় সব মনোনয়ন জমা দিতে পারিনি।’’

রঘুনাথবাড়ি পঞ্চায়েতই শুধু নয়। পাঁশকুড়ার গোবিন্দনগর, মাইশোরা, কেশাপাট পঞ্চায়েত-সহ বহু আসনেই বিরোধীশূন্য ভাবে ভোটের আগেই জিতে গিয়েছে তৃণমূল। ব্লকের ২০৮টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭৯টি এবং ৪০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১০টিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল প্রার্থীরা। এইসব এলাকায় বামফ্রন্ট, বিজেপি-সহ বিরোধী দলের দখল করা দেওয়াল খালিই পড়ে রয়েছে। পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি দীপ্তিকুমার জানা বলেন, ‘‘বিরোধীদের জনসমর্থন না থাকাতেই ওইসব আসনে প্রার্থী খুঁজে পায়নি তারা। এখন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’’

পাঁশকুড়ার মত ছবি সুতাহাটা ব্লকের হোড়খালি, গুয়াবেড়িয়া, জয়নগরে। তবে উল্টো ছবিও আছে। তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাখরদা পঞ্চায়েতের একটি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তৃণমূল প্রার্থী অর্ধেন্দু মাইতির বিরুদ্ধে বিরোধী প্রার্থী না থাকায় তাঁর জয় নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু অর্ধেন্দুবাবুর নামে গ্রামের একাধিক দেওয়াল লিখন জ্বলজ্বল করছে। এই ব্লকের ১৫২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৭টি ও ৩০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৪টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল।

তৃণমূলের আহ্বায়ক শরৎ মেট্যার দাবি, ‘‘ব্লকের বেশিরভাগ আসনেই বিরোধী প্রার্থী রয়েছে। সাংগঠনিক ক্ষমতা না থাকায় কিছু আসনে তারা প্রার্থী দিতে না পেরে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 CPM Wall Graffiti
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy