Advertisement
E-Paper

তাড়া খেয়ে পানাপুকুরে, ঠান্ডা থেকে বাঁচতে আর্তি বাইক চোরের

চুরি করতে এসে ধরা পড়ে পালাতে গিয়ে ভয়ে নয়, ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে প্রাণ বাঁচানোর জন্য চোরের কাতর আর্জি শুনতে হল গ্রামবাসীদের। কোলাঘাটের পুলসিটা গ্রামে শনিবার রাতে চোরের এমন কর্মকাণ্ডে ঘুম ছুটল গ্রামবাসীর।      

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১৩
ধরা পড়ার পর লক্ষ্মীকান্ত পাত্র। নিজস্ব চিত্র

ধরা পড়ার পর লক্ষ্মীকান্ত পাত্র। নিজস্ব চিত্র

বাইক চুরি করতে এসে ধরা পড়ার ভয় ছিলই। তা বলে যে এ ভাবে প্রাণ ওষ্ঠাগত হবে, ভাবতে পারেনি চোরবাবাজি।

চুরি করতে এসে ধরা পড়ে পালাতে গিয়ে ভয়ে নয়, ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে প্রাণ বাঁচানোর জন্য চোরের কাতর আর্জি শুনতে হল গ্রামবাসীদের। কোলাঘাটের পুলসিটা গ্রামে শনিবার রাতে চোরের এমন কর্মকাণ্ডে ঘুম ছুটল গ্রামবাসীর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত দেড়টা নাগাদ পুলসিটা গ্রামে তাপস কপাটের বাড়ির বারান্দার গ্রিল কেটে বাইকের তালা ভেঙে তা নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল দুই চোর। তালা ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তাপসবাবুর। ঘরের বাইরে এসে তিনি দেখেন সবেমাত্র তাঁর বাইকটি স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করছে একজন। কিছু দূরে অন্য একটি বাইকে অপেক্ষা করছে আর একজন। তাপসবাবুর বাইকটি স্টার্ট না নেওয়ায় বারবার চেষ্টা করছিল চোর। তিনি এসে পড়ায় বাইক ফেলেই অন্য বাইকের দিকে দৌড় লাগায় চোর। গৃহস্থকে পিছু ধাওয়া করতে দেখে সঙ্গীকে ফেলেই বাইক চালিয়ে চম্পট দেয় অন্যজন। ততক্ষণে তাপসবাবুর চিৎকারে জেগে উঠেছে গোটা পাড়া। রে রে করে বেরিয়ে পড়েছেন সকলেই। প্রাণ বাঁচাতে দিগভ্রান্ত হয়ে অগত্যা পানাপুকুরেই ঝাঁপ দিল চোরবাবাজি লক্ষীকান্ত পাত্র। কিন্তু কচুরিপানায় ভর্তি পুকুরে চোরকে ঠাহর করতে না পেরে পুকুরের চারপাশে পাহারায় বলে গেল গোটা গ্রাম। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে চোর যাতে পালাতে না পারে সে জন্য নিমেষে চলে এল বড় বড় হ্যালোজেন বাতি। তাকে দেখতে না পেলে গ্রামের লোকজন রাতে ঠান্ডায় থাকতে না পেরে ফিরে যাবে বলে ভেবেছিল চোরবাবাজী। কিন্তু সে গুড়ে বালি। প্রাণ ভয়ে রাত দেড়টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত জলের মধ্যেই কচুরিপানার আড়াল নিয়ে চুপ করে বলেছিল চোর। কিন্তু ঠান্ডা আর কচুরি পানায় আটকে ততক্ষণে প্রাণ যায়রয় তার। শেষে আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে পুকুরপাড়ে থাকা গ্রামবাসীরা দেখলেন কচুরিপানার আড়াল থেকে চোববাবাজী বেরিয়ে এসে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছে।

আরও পড়ুন: ‘মন্ত্রী আসে, মন্ত্রী যায়, শুধু হাবা বদলায় না’

পুকুর থেকে চোরকে উদ্ধার করতে চলে এল বাঁশ। তবে তাতে হল না। অগত্যা কাছি লাগিয়ে তুলে আনা হল চোরকে। প্রায় চার ঘণ্টা জলে থেকে চোরের তখন দফারফা। কিন্তু তাতে কী! চোরকে হাতে পেয়ে শুরু হল কিল, চড়, ঘুসি। হাতের ‘সুখ’ মেটানোর পর খবর গেল কোলাঘাট থানায়। শেষে পুলিশ এসে নিয়ে যেতে হাঁফ ছাড়ল চোর।

আরও পড়ুন: চাদর-চাপা শিশুপুত্রের দেহ, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলেন মা

তাপসবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে গ্রিলের দরজা ভেঙে বাইক চুরি করতে এসেছিল চোরেরা তাতে আমরা আতঙ্কিত।’’ তাঁর দাবি, থানায় বিষয়টি জানানো হয়েছে। যদিও কোলাঘাট থানা সূত্রে দাবি, এই ধরনের কোনও ঘটনা জানা নেই। তবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আগে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তার বাড়ি চণ্ডীপুরে।

Thief Kolaghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy