Advertisement
E-Paper

জামিনে মুক্ত নেতাদের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা বিজেপির

এ যেন শূন্য থেকে শুরুর লড়াই! নয়াগ্রাম ব্লকের জেলবন্দি দুই বিজেপি নেতা জামিনে ছাড়া পাওয়ায় সাংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী নিচুতলার কর্মীরা। বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু পাত্র ও তাঁর ভাই সুখেন্দু পাত্র পুরনো একটি খুনের মামলায় গত পাঁচ মাস জেলবন্দি ছিলেন।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০১:৫৮
অর্ধেন্দু পাত্র ও সুখেন্দু পাত্র। —ফাইল চিত্র।

অর্ধেন্দু পাত্র ও সুখেন্দু পাত্র। —ফাইল চিত্র।

এ যেন শূন্য থেকে শুরুর লড়াই!

নয়াগ্রাম ব্লকের জেলবন্দি দুই বিজেপি নেতা জামিনে ছাড়া পাওয়ায় সাংগঠনিক ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী নিচুতলার কর্মীরা। বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু পাত্র ও তাঁর ভাই সুখেন্দু পাত্র পুরনো একটি খুনের মামলায় গত পাঁচ মাস জেলবন্দি ছিলেন। এই ক’টা মাস নয়াগ্রাম ব্লকে কোনও রকম রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ছিল না গেরুয়া শিবির। দিন কয়েক আগে ঝাড়গ্রাম দায়রা আদালতে পাত্র ভাইদের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর হয়। অর্ধেন্দুবাবু ছিলেন মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। আর ঝাড়গ্রাম উপ সংশোধনাগারে ছিলেন সুখেন্দুবাবু। আদালতের নির্দেশে সোমবার দু’জনেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। সোমবার রাতে দুই নেতা থুরিয়া গ্রামের বাড়িতে ফেরার পরে নিচুতলার উচ্ছ্বসিত কর্মীরা ভিড় জমিয়েছিলেন। বিজেপি সূত্রের খবর, কিছুদিনের মধ্যে নয়াগ্রামে বড় ধরনের সমাবেশের আয়োজন করা হবে। ওই সমাবেশের মঞ্চে পাত্র ভাইদের হাজির করার পরিকল্পনা রয়েছে। সমাবেশে রাজ্য নেতৃত্ব থাকবেন। পাশাপাশি, এক বা একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদেরও নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে। অর্ধেন্দুবাবু ও সুখেন্দুবাবু অবশ্য এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চান নি।

বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনীকুমার ঘোষ বলেন, “অর্ধেন্দুবাবু ও সুখেন্দুবাবু দু’জনেই নয়াগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাঁরা জেল থেকে ছাড়া পাওয়ায় এবার নয়াগ্রামে বড় ধরনের দলীয় সমাবেশ করা হবে।” অবনীবাবুর অভিযোগ, বিজেপি-কে ঠেকাতে দলের নেতা-কর্মীদের সাজানো মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। তৃণমূলের কোনও জনভিত্তি না থাকায় পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা হচ্ছে।

গত জানুয়ারি মাসে পাত্র ভাইরা গ্রেফতার হওয়ায় নয়াগ্রামে সাংগঠনিক ভাবে প্রবল ধাক্কা খায় বিজেপি। পাশাপাশি, দলের বেশ কিছু সক্রিয় কর্মীও ওই সময় গ্রেফতার হন। এই পরিস্থিতিতে গত পাঁচ মাসে বিজেপি-র পক্ষে নয়াগ্রামে কোনও ধরনের প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া সম্ভব হয় নি। বিজেপি সূত্রের অবশ্য দাবি, অর্ধেন্দুবাবুরা জেলে থাকায় প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মসূচি হয় নি এটা ঠিক। তবে দুই নেতার সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে নয়াগ্রামের মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করছেন। তার প্রমাণ এই ক’মাসে উল্লেখযোগ্য হারে বিজেপি-র প্রাথমিক সদস্য সংখ্যা বেড়েছে। অবনীবাবুর দাবি, নয়াগ্রাম ব্লকে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ করা গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বিধানসভা ভোটের আগে দুই নেতাকে সামনে রেখে নয়াগ্রামের জমি দখলে ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপি।

রাজ্যে ক্ষমতার পালা বদলের পরে নয়াগ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগে বিজেপি-র উত্থানপর্ব শুরু হয়। বছর খানেক আগে তৃণমূলের তত্‌কালীন ব্লক সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দুবাবু ও তাঁর ভাই সুখেন্দুবাবু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি-র ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পান অর্ধেন্দুবাবু। এবং সুখেন্দুবাবুকে বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটির সদস্য পদ দেওয়া হয়। পাত্র ভাইরা গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ায় চিন্তায় পড়ে যায় শাসক দল।

অন্য দিকে, স্থানীয় সূত্রে খবর, বিধানসভা ভোটের আগে পরিবর্তিত পরিস্থতিতে অর্ধেন্দুবাবু ও সুখেন্দুবাবুকে দলে ফেরাতে আগ্রহী তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। জামিন পাওয়ার পরে অর্ধেন্দুবাবু ও তাঁর ভাইয়ের নীরবতা নিয়ে এলাকায় জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তাই তড়িঘড়ি বিজেপি নেতৃত্ব বড় ধরনের সমাবেশ করতে চাইছেন। তবে পাত্র ভাইরা কী করেন আপাতত সেদিকেই দৃষ্টি রাখছে রাজনৈতিক মহল।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ বলেন, “অর্ধেন্দু-সুখেন্দুরা তৃণমূলে ফিরছেন বলে আমার কাছে খবর নেই। তাঁরা তৃণমূলে ফিরতে চাইলে স্বাগত জানাব।”

গত জানুয়ারিতে নয়াগ্রাম সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচন ছিল। সব ক’টি আসনে প্রার্থী দেয় এবিভিপি (অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ)। কলেজ ভোটের কয়েক দিন আগে গত ১৮ জানুয়ারি ডাকাতির প্রস্তুতি ও অস্ত্র আইনে গ্রেফতার হন অর্ধেন্দুবাবু ও সুখেন্দুবাবু-সহ বিজেপি-র স্থানীয় ২৯ জন নেতা-কর্মী। পরে ২৭ জন জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। পাত্র ভাইদের রাষ্ট্রদ্রোহ ও খুনের পুরনো দু’টি মামলাতেও অভিযুক্ত করে পুলিশ। খুনের মামলায় জামিন না মেলায় টানা পাঁচ মাস পাত্র ভাইরা জেলবন্দি ছিলেন। গত শুক্রবার ঝাড়গ্রাম দায়রা আদালতে পাত্র ভাইদের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর হয়।

Jamuria BJP BJP leader Congress Trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy