সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপি দখল করলেও শেষমেষ অঙ্ক মিলল না। মঙ্গলবার স্থায়ী সমিতি গঠনের সভায় কার্যত সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে গেল তৃণমূল। একে একে পঞ্চায়েত সমিতির ৯টি স্থায়ী সমিতি দখল করে নিল শাসকদল। দিনের শেষে বিজেপি শিবিরে কেবলই শূন্যতা।
এ বার পঞ্চায়েত ভোটে সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে বিজেপি দখল করেছিল ১১টি। তৃণমূল ১০ আসনে জয়ী হয়। মাস তিনেক আগে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন করেছিল বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন বিজেপির ভূপেন কালিন্দী। বিজেপির দরবারি কিস্কু সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু এদিন স্থায়ী সমিতি গঠনের সভায় কার্যত তৃণমূলের কাছে ধরাশায়ী হয়ে গেল গেরুয়া শিবির।
নিয়ম অনুযায়ী, স্থায়ী সমিতি গঠনে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য, এলাকার বিধায়ক ও সাংসদও এক্স অফিসিও সদস্য হিসেবে ভোটাভুটিতে যোগ দিতে পারেন। এ দিন সেই কৌশলই নিয়েছিল তৃণমূল। সাঁকরাইল ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬টি তৃণমূলের দখলে। বাকি ৪টির ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। ব্লক থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের দু’জন সদস্যের মধ্যে একজন তৃণমূলের, আর একজন বিজেপি-র। এ দিন স্থায়ী সমিতির গঠনের সভায় পঞ্চায়েত সমিতির ২১ জন সদস্য, ১০ প্রধান, ২ জন জেলা পরিষদ সদস্য, গোপীবল্লভপুরের তৃণমূল বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতো ও ঝাড়গ্রামের তৃণমূল সাংসদ উমা সরেনও হাজির ছিলেন। তৃণমূলের শিবিরে ছিলেন ১৯ জন। বিজেপি শিবিরে ছিলেন ১৬ জন। পর পর ভোটাভুটিতে ১৯-১৬ ভোটের ব্যবধানে জনস্বাস্থ্য, পূর্ত, কৃষি, শিক্ষা, নারী-শিশু-জনকল্যাণ, বন ও ভূমি, মৎস্য প্রাণিসম্পদ এবং বিদ্যুৎ এই ৯টি স্থায়ী সমিতিতে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি স্থায়ী সমিতির সদস্য সংখ্যা ৭ জন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি স্থায়ী সমিতিতে সভাপতি ও সহ সভাপতি থাকেন। প্রতিটি স্থায়ী সমিতিকে বাকি পাঁচজন করে তৃণমূলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে, কার্যত পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সভাপতি ও সহ-সভাপতির কোনও ক্ষমতাই থাকল না। এরপরে স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন করা হবে। সংখ্যার বিচারে তৃণমূলই ৯টি কর্মাধ্যক্ষের পদ দখল করতে চলেছে।
সাঁকরাইল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সোমনাথ মহাপাত্র বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত আইনের বিধান অনুযায়ী ভোটাভুটিতে ৯টি স্থায়ী সমিতিতে আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে গিয়েছি। সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতি আমরাই চালাব।’’ জেলা বিজেপির সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘যে পদ্ধতিতে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে ভোট দিয়েছেন, সেটা বাম আমলের পুরনো আইন। স্থায়ী সমিতি দখল করার জন্য বাম আমলের পুরনো আইনকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল। জোর করে দখলের অপচেষ্টা করছে।’’
জেলাশাসক আয়েষা রানি জানান, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতিগুলি গঠিত হয়েছে। বিধান অনুযায়ী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, জেলা পরিষদ সদস্য, বিধানসভা ও লোকসভা কেন্দ্রের জনপ্রতিনিধিরা ভোটাভুটিতে যোগ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy