Advertisement
E-Paper

মাধ্যমিকের পরেও থেমে যাওয়া নয়, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ কাকলিরা

তমলুকের নিমতৌড়ির প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের ওই সকল পড়ুয়ারা শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে মাধ্যমিক জয়ের জন্য লড়ছে। সকলেই দরিদ্র পরিবারের সন্তান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:২২

জন্ম থেকেই দেখতে পায় না ভগবানপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম মির্জাপুরের মেয়ে কাকলি মাইতি। কাকলির মতই দৃষ্টিহীন নন্দকুমারের বহিচবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মাধুরী সামন্ত। একই রকম শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে প্রবীর বর্মণ, সুমনা মাইতি, মনীষা খাতুন, মীনাক্ষী মাইতির। কিন্তু এঁদের সকলেরই মধ্যে আর একটি মিল রয়েছে। এরা সকলেই আজ, মঙ্গলবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে চলছে।

তমলুকের নিমতৌড়ির প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের ওই সকল পড়ুয়ারা শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে মাধ্যমিক জয়ের জন্য লড়ছে। সকলেই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। কাকলির বাবা পশুপতি মাইতি পেশায় তাঁত শ্রমিক। সামান্য আয়ের সংসারে দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো এবং কাকলির শারিরীক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তার বাবা-মা। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিল কাকলি। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সেখানে পড়ার পর তাকে ভর্তি করা হয় তমলুকের নিমতৌড়ির প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে। ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা করার সাথে হারমোনিয়াম বাজানো শিখেছে কাকলি।

মাধুরীর বাবা কালীপদ শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান। মাধুরী লেখাপড়ার সাথে অক্টোপ্যাড বাজানো শিখেছে। তমলুকের বড়বড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মনীষার চার ভাই-বোন মূক ও বধির। বাবা মাহমুদ মল্লিক শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। তবে লিভারের অসুখে আক্রান্ত হয়ে এখন কর্মহীন। মনীষার মতোই মূক-বধির মহিষাদলের তেরপেখ্যা গ্রামের মীনাক্ষী মাইতি। ক্যানসার আক্রান্ত বাবা ছ’মাস আগে মারা গিয়েছে। এত কিছুর পরেও ওই ছয় পড়ুয়া মাধ্যমিকে ভাল করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

কাকলি বলেন, ‘‘আমি মাধ্যমিকের পরও পড়াশোনা করতে চাই। গানবাজনা শিখে শিল্পী হতে চাই।’’ মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা মহেশ্বতা বাসুলি বলেন, ‘‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি ওর প্রত্যেকেই খুব গরিব পরিবারের। কিন্তু এত বাধা সত্ত্বেও পড়াশোনায় ওদের আগ্রহ আমাদেরও উৎসাহিত করেছে। আশা করছি প্রত্যেকে ভাল ফল করবে।’’ নিমতৌড়ি তমলুক উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক যোগেশ সামন্ত বলেন, ‘‘কাকলি, মনীষাদের মত শারিরীক প্রতিবন্ধকতা এবং পারিবারিক দারিদ্রতাকে হারিয়ে পড়াশোনা করা একটা বড়সড় পরীক্ষা। সকলেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল হবে বলে আশা রাখছি।’’

Madhyamik Blind Girls
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy